পুতিন-জেলেনস্কি আলোচনায় না বসলে ‘প্রতিক্রিয়া হবে’, ট্রাম্পের হুঁশিয়ারি

ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে আলোচনায় ব্যর্থ হওয়ায় গভীর হতাশা প্রকাশ করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। পুতিনের এমন মনোভাবে তিনি বিশ্বাসঘাতকতা বোধ করছেন বলেও উল্লেখ করেন। তবে মস্কোর বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নেওয়া হতে পারে, সে বিষয়ে তিনি নির্দিষ্ট করে কিছু বলেননি।

গত মাসে আলাস্কায় পুতিনের সঙ্গে এক বৈঠকে ট্রাম্প তাকে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির সঙ্গে শান্তি আলোচনায় বসার আহ্বান জানিয়েছিলেন। কিন্তু সেই আহ্বান উপেক্ষা করে রাশিয়া কিয়েভে আক্রমণ আরও তীব্র করে।

স্কট জেনিংসের রেডিও শোতে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ট্রাম্প বলেন, ‘আমি প্রেসিডেন্ট পুতিনের ওপর খুবই হতাশ। এটা আমি বলতেই পারি।’ পুতিনের ভূমিকায় বিশ্বাসঘাতকতা বোধ করছেন কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমাদের দারুণ সম্পর্ক ছিল, কিন্তু আমি এখন খুব হতাশ।’

তবে রাশিয়ার জন্য কী ধরনের পরিণতি অপেক্ষা করছে, তা ট্রাম্প স্পষ্ট করেননি। যদিও শান্তি চুক্তির জন্য তার দেওয়া দুই সপ্তাহের সময়সীমা এ সপ্তাহেই শেষ হতে চলেছে। তিনি শুধু বলেছেন, ‘মানুষের জীবন বাঁচাতে আমি কিছু করব।’

ওভাল অফিসে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমি এমন কিছু জেনেছি যা আগামী কয়েক দিনের মধ্যে সবাই জানতে পারবে। যদি পুতিন ও জেলেনস্কি শান্তি আলোচনায় না বসেন, তাহলে প্রতিক্রিয়া অবশ্যই হবে।’

এদিকে রাশিয়া ও চীনের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে ট্রাম্প বলেন, ‘আমি এটি নিয়ে মোটেও চিন্তিত নই। আমাদের বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী সেনাবাহিনী আছে। তাই তারা আমাদের বিরুদ্ধে কখনো কিছু করবে না। সেটা ওদের জীবনের সবচেয়ে বড় ভুল হবে।’

মঙ্গলবার পুতিন বেইজিংয়ে চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন, যেখানে একটি বিশাল সামরিক কুচকাওয়াজের আয়োজন করা হয়। পুতিন শি জিনপিংকে জানান, তাদের দুই দেশের সম্পর্ক ‘অভূতপূর্ব পর্যায়ে’ পৌঁছেছে। এ অনুষ্ঠানে উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং উনও উপস্থিত ছিলেন, যিনি ইউক্রেন যুদ্ধে রাশিয়াকে সৈন্য দিয়ে সহায়তা করেছেন।

মার্কিন অর্থমন্ত্রী স্কট বেসেন্ট ফক্স নিউজকে জানান, রাশিয়ার ওপর সম্ভাব্য নিষেধাজ্ঞা আরোপের বিষয়ে চলতি সপ্তাহে প্রশাসন বিভিন্ন বিকল্প পর্যালোচনা করবে। তিনি বলেন, আলাস্কা সম্মেলন এবং হোয়াইট হাউসে জেলেনস্কি ও ইউরোপীয় নেতাদের সঙ্গে ট্রাম্পের দীর্ঘ ফোনালাপের পর পুতিন যা করার ইঙ্গিত দিয়েছিলেন, তার সম্পূর্ণ বিপরীত কাজ করেছেন।

বেসেন্ট আরও বলেন, ‘প্রকৃতপক্ষে, তিনি অত্যন্ত নিন্দনীয়ভাবে বোমা হামলার মাত্রা বাড়িয়েছেন। তাই আমি মনে করি, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সামনে সব বিকল্পই খোলা আছে এবং আমরা এ সপ্তাহে সেগুলো খুব কাছ থেকে পরীক্ষা করব।’