ইসরায়েলের ওপর আনুষ্ঠানিক অস্ত্র নিষেধাজ্ঞা স্পেনের

ইসরায়েলের ওপর একটি পূর্ণাঙ্গ অস্ত্র নিষেধাজ্ঞা আনুষ্ঠানিকভাবে অনুমোদন করেছে স্পেনের পার্লামেন্ট। গাজায় ইসরায়েলের যুদ্ধের প্রতিক্রিয়ায় গত মাসে ঘোষিত বৃহত্তর নিষেধাজ্ঞার প্যাকেজের অংশ হিসেবে বুধবার এই সরকারি ডিক্রিটি পাস হয়।

ইউরোপীয় ইউনিয়নে ইসরায়েলের অন্যতম কঠোর সমালোচক স্পেন জানিয়েছে, এই ডিক্রির আওতায় ইসরায়েলের সঙ্গে সব ধরনের প্রতিরক্ষা ও দ্বৈত-ব্যবহারযোগ্য প্রযুক্তির আমদানি-রপ্তানি নিষিদ্ধ করা হয়েছে। স্পেন সরকারের মতে, সম্ভাব্য সামরিক ব্যবহারের জন্য জ্বালানি বা সরঞ্জাম বহনকারী জাহাজ ও বিমানকে স্পেনের বন্দর এবং আকাশসীমায় প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। পাশাপাশি, অধিকৃত ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে অবৈধ ইসরায়েলি বসতি থেকে পণ্য আমদানিও বন্ধ করা হয়েছে।

বামপন্থী ও আঞ্চলিক মিত্রদের সঙ্গে কট্টর-বামপন্থী পোডেমোস পার্টি যোগ দেওয়ায় এই ডিক্রিটি অল্প ব্যবধানে পাস হয়। পোডেমোস পার্টির নেত্রী ইওনে বেলারা, যিনি শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত তার দলের অবস্থান প্রকাশ করেননি, তিনি বলেন, সরকারকে অবশ্যই বিদ্যমান চুক্তি বাতিল করে ইসরায়েলের সঙ্গে সব ধরনের সম্পর্ক ছিন্ন করতে হবে। এর আগে তিনি এই ডিক্রিটিকে ‘নকল নিষেধাজ্ঞা’ হিসেবে আখ্যায়িত করে অভিযোগ করেন, গত মাসে ডিক্রি কার্যকর হওয়া সত্ত্বেও সরকার অস্ত্রের চুক্তি অব্যাহত রেখেছে এবং ‘ইসরায়েলগামী মার্কিন সামরিক সরঞ্জাম বহনকারী চারটি জাহাজকে’ স্পেনের বন্দরে ভিড়তে দিয়েছে।

মঙ্গলবার এক সংসদীয় বিতর্কে স্পেনের অর্থনীতি মন্ত্রী কার্লোস কুয়েরপো এই নিষেধাজ্ঞাকে ‘আন্তর্জাতিক পর্যায়ে একটি দৃঢ় ও অগ্রণী পদক্ষেপ’ হিসেবে অভিহিত করেন। প্রতিরক্ষা মন্ত্রী মার্গারিটা রোবেলস এই পদক্ষেপকে ‘একটি দীর্ঘ প্রক্রিয়ার চূড়ান্ত ধাপ’ বলে উল্লেখ করেন। তিনি জানান, ৭ অক্টোবরের সন্ত্রাসী হামলার পরপরই স্পেন ইসরায়েলের কাছে সামরিক সরঞ্জাম বিক্রি বন্ধ করে দিয়েছে।

তবে, রক্ষণশীল পপুলার পার্টি (পিপি) এবং কট্টর-ডানপন্থী ভক্স পার্টি এই ডিক্রির বিরোধিতা করেছে।

ভোটটি মূলত মঙ্গলবারের জন্য নির্ধারিত ছিল, কিন্তু ৭ অক্টোবরের সন্ত্রাসী হামলার বর্ষপূর্তির সঙ্গে মিলে যাওয়ায় তা একদিন পিছিয়ে দেওয়া হয়। মাদ্রিদে অবস্থিত ইসরায়েলের দূতাবাস এই সময় নির্ধারণকে ‘অমানবিক ও বিকৃত’ বলে সমালোচনা করেছিল।

প্রধানমন্ত্রী পেদ্রো সানচেজের সরকার সেপ্টেম্বরে যে নিষেধাজ্ঞার প্যাকেজ গ্রহণ করে, এই অস্ত্র নিষেধাজ্ঞা তারই অংশ। প্যাকেজটিতে ফিলিস্তিনের জন্য মানবিক সহায়তা বৃদ্ধি এবং অধিকৃত ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে অবৈধ বসতি থেকে পণ্য আমদানিতে নিষেধাজ্ঞাও অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।