গাজা যুদ্ধবিরতি চুক্তি: ভোট ছাড়াই শেষ ইসরায়েলের নিরাপত্তা মন্ত্রিসভার বৈঠক

ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ গোষ্ঠী হামাসের সঙ্গে একটি যুদ্ধবিরতি চুক্তির বিষয়ে কোনো ভোট ছাড়াই ইসরায়েলের নিরাপত্তা মন্ত্রিসভার বৈঠক শেষ হয়েছে। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় এই বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হয়, যার মূল উদ্দেশ্য ছিল গাজায় যুদ্ধবিরতি ও জিম্মি মুক্তি চুক্তি অনুমোদন করা।

ইসরায়েলি দৈনিক ইয়েদিওত আহরোনোথের তথ্যমতে, স্থানীয় সময় বিকেল ৫টায় বৈঠকটি শুরু হওয়ার কথা থাকলেও তা এক ঘণ্টার বেশি বিলম্বিত হয়। পরবর্তীতে, চুক্তিটি অনুমোদনের জন্য নির্ধারিত সরকারি অধিবেশনও চার ঘণ্টা দেরিতে রাত ১০টা পর্যন্ত স্থগিত করা হয়।

এর আগে একজন সরকারি মুখপাত্র জানান, গাজা যুদ্ধবিরতি চুক্তি অনুমোদনের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে কার্যকর হবে। মুখপাত্র শোশ বেড্রোসিয়ান বলেন, ‘মন্ত্রিসভার বৈঠকের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে গাজায় যুদ্ধবিরতি শুরু হবে’। তবে তিনি এটি কার্যকরের কোনো নির্দিষ্ট সময় উল্লেখ করেননি।

তুরস্ক, মিশর, কাতার এবং যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় মিশরের শার্ম আল-শেখ শহরে হামাস ও ইসরায়েলের মধ্যে চার দিন ধরে চলা পরোক্ষ আলোচনার পর বৃহস্পতিবার ভোরে এই যুদ্ধবিরতি চুক্তির ঘোষণা দেওয়া হয়।

গত ২৯ সেপ্টেম্বর মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প গাজার জন্য ২০-দফা একটি পরিকল্পনা উন্মোচন করেন। এই পরিকল্পনার মধ্যে প্রায় ২,০০০ ফিলিস্তিনি বন্দির বিনিময়ে সমস্ত ইসরায়েলি জিম্মিকে মুক্তি, একটি স্থায়ী যুদ্ধবিরতি এবং সমগ্র গাজা উপত্যকা থেকে পর্যায়ক্রমে ইসরায়েলি সেনা প্রত্যাহার অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।

এই পরিকল্পনার দ্বিতীয় ধাপে হামাসের অংশগ্রহণ ছাড়া গাজায় একটি নতুন শাসন ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা, ফিলিস্তিনি এবং আরব ও ইসলামি দেশগুলোর সৈন্যদের নিয়ে একটি নিরাপত্তা বাহিনী গঠন এবং হামাসকে নিরস্ত্র করার কথা বলা হয়েছে। এতে আরও বলা হয়েছে যে, ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের সীমিত অংশগ্রহণে নতুন প্রশাসন এবং গাজা উপত্যকার পুনর্গঠনের জন্য আরব ও ইসলামি দেশগুলো অর্থায়ন করবে।

আরব ও মুসলিম দেশগুলো এই পরিকল্পনাকে স্বাগত জানিয়েছে, তবে কিছু কর্মকর্তা বলেছেন যে এটি সম্পূর্ণরূপে বাস্তবায়নের জন্য অনেক বিষয়ে আলোচনা ও আলোচনার প্রয়োজন রয়েছে।

উল্লেখ্য, ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে ইসরায়েলের বর্বরোচিত হামলায় গাজায় প্রায় ৬৭,২০০ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, যাদের বেশিরভাগই নারী ও শিশু। এই হামলায় উপত্যকাটি বসবাসের অযোগ্য হয়ে পড়েছে।