গাজা থেকে ইসরায়েলি সেনা প্রত্যাহার, বেরিয়ে এলো ভয়াবহ ধ্বংসযজ্ঞের চিত্র

গাজা শহর থেকে ইসরায়েলি বাহিনীর আংশিক সেনা প্রত্যাহার শুরু হতেই আবাসিক এলাকা ও অবকাঠামো জুড়ে চালানো ভয়াবহ ধ্বংসযজ্ঞের চিত্র বেরিয়ে এসেছে। যুদ্ধবিরতি চুক্তির আওতায় সেনা সরিয়ে নেওয়া শুরু হলে দেখা যায়, শহরের বেশিরভাগ জেলাই ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে।

সামাজিক মাধ্যমে বিভিন্ন কর্মী ও সাংবাদিকদের শেয়ার করা ভিডিওতে ইসরায়েলি বাহিনীর ছেড়ে যাওয়া এলাকাগুলোতে নজিরবিহীন ধ্বংসের দৃশ্য দেখা গেছে। শুক্রবার থেকে যুদ্ধবিরতি চুক্তির অংশ হিসেবে গাজা উপত্যকার ‘ইয়েলো লাইন’ বরাবর সেনারা নতুন অবস্থানে সরে যাচ্ছে। ভিডিওগুলোতে মাটির সঙ্গে মিশে যাওয়া বাড়িঘর, চূর্ণবিচূর্ণ স্থাপনা এবং বুলডোজার দিয়ে গুঁড়িয়ে দেওয়া রাস্তার মর্মান্তিক দৃশ্য ফুটে উঠেছে। সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলোর মধ্যে রয়েছে উত্তর গাজা শহরের শেখ রাদওয়ান এলাকার সাইদ সিয়াম মসজিদের আশপাশের অঞ্চল।

ওই এলাকায় ভারী গোলার আঘাতে আবাসিক ভবনগুলো হয় পুরোপুরি ভেঙে পড়েছে, নয়তো বসবাসের অযোগ্য হয়ে গেছে। শেখ রাদওয়ানের পূর্বাংশও একইভাবে মাটিতে মিশিয়ে দেওয়া হয়েছে, যেখানে পুরো ব্লক নিশ্চিহ্ন এবং প্রধান সড়কগুলো বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। জানা গেছে, পর্যায়ক্রমে সেনা প্রত্যাহারের আগে ইসরায়েলি বাহিনী শেখ রাদওয়ানসহ বেশ কয়েকটি এলাকায় ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ ও বোমাবর্ষণ অভিযান চালায়। এর আগে বিভিন্ন অভিযানে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া পূর্বাঞ্চলের নিকটবর্তী সুড়ঙ্গ এলাকাতেও ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ চালানো হয়েছে। এছাড়া, শহরের উত্তর-পশ্চিমে অবস্থিত আল-নাসর এলাকার হাজার হাজার বাড়িঘর ধ্বংস বা ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার দৃশ্যও ভিডিওতে উঠে এসেছে।

ইসরায়েলি গণমাধ্যম অনুসারে, শুক্রবার থেকে গাজা উপত্যকা থেকে পর্যায়ক্রমে সেনা প্রত্যাহার শুরু করেছে ইসরায়েলি বাহিনী। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের যুদ্ধ সমাপ্তির পরিকল্পনা অনুযায়ী নির্দিষ্ট স্থানে আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে এই প্রত্যাহার প্রক্রিয়া সম্পন্ন হবে।

বৃহস্পতিবার সকালে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রালূম্প ঘোষণা করেন যে, তার যুদ্ধবিরতি ও বন্দি বিনিময় পরিকল্পনার প্রথম ধাপে ইসরায়েল এবং ফিলিস্তিনি গোষ্ঠী হামাস একটি চুক্তিতে পৌঁছেছে। মার্কিন তত্ত্বাবধানে তুরস্ক, মিশর ও কাতারের প্রতিনিধি দলের অংশগ্রহণে মিশরের শার্ম আল-শেখ শহরে চার দিন ধরে দুই পক্ষের মধ্যে পরোক্ষ আলোচনার পর এই চুক্তিটি সম্পাদিত হয়।

উল্লেখ্য, ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি হামলায় প্রায় ৬৭,২০০ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, যাদের বেশিরভাগই নারী ও শিশু। এই লাগাতার হামলায় অঞ্চলটি বসবাসের অযোগ্য হয়ে পড়েছে।