অ্যামাজনে ফের বড় ধরনের ছাঁটাই, চাকরি হারাচ্ছেন ১৪ হাজার কর্মী

মার্কিন প্রযুক্তি ও ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান অ্যামাজন তাদের করপোরেট বিভাগ থেকে প্রায় ১৪ হাজার কর্মী ছাঁটাইয়ের পরিকল্পনা ঘোষণা করেছে। প্রতিষ্ঠানটির ব্যয় সংকোচন উদ্যোগের অংশ হিসেবে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে মঙ্গলবার এক ঘোষণায় জানানো হয়।

অ্যামাজন এক ব্লগ পোস্টে জানিয়েছে, আমলাতান্ত্রিকতা কমিয়ে প্রতিষ্ঠানকে আরও গতিশীল করার লক্ষ্যে এই ছাঁটাই করা হচ্ছে। একই সঙ্গে তারা জেনারেটিভ কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার (এআই) মতো গুরুত্বপূর্ণ খাতগুলোতে বড় ধরনের বিনিয়োগের পরিকল্পনা করছে। বিবৃতিতে বলা হয়, ‘যদিও কিছু ক্ষেত্রে কর্মী কমানো হবে এবং অন্য ক্ষেত্রে নতুন নিয়োগ দেওয়া হবে, তবে সার্বিকভাবে আমাদের করপোরেট কর্মী বাহিনী থেকে প্রায় ১৪ হাজার পদ কমানো হবে।’

অ্যামাজনের পিপল এক্সপেরিয়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি বিভাগের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট বেথ গ্যালেটি জানিয়েছেন, ইন্টারনেটের পর থেকে আমরা যত প্রযুক্তি দেখেছি, তার মধ্যে এই প্রজন্মের কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা সবচেয়ে যুগান্তকারী। এটি প্রতিষ্ঠানগুলোকে আগের চেয়ে অনেক দ্রুত উদ্ভাবনে সহায়তা করছে। তিনি আরও বলেন, ‘আমরা মনে করি, গ্রাহক ও ব্যবসার জন্য দ্রুততম সময়ে সেবা নিশ্চিত করতে হলে আমাদের আরও ছিমছাম ও গতিশীলভাবে সংগঠিত হতে হবে, যেখানে কাজের স্তর কম থাকবে এবং মালিকানা বাড়বে।’

মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনবিসির তথ্য অনুযায়ী, এটি অ্যামাজনের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় করপোরেট কর্মী ছাঁটাইয়ের ঘটনা হতে চলেছে। চলতি বছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকের হিসাব অনুযায়ী, প্রায় ১৫ লাখ ৪০ হাজার কর্মী নিয়ে অ্যামাজন যুক্তরাষ্ট্রের দ্বিতীয় বৃহত্তম বেসরকারি নিয়োগকর্তা। এই কর্মীদের অধিকাংশই তাদের গুদামগুলোতে কর্মরত। প্রতিষ্ঠানটির করপোরেট ও তথ্যপ্রযুক্তি বিভাগে সাড়ে তিন লাখের বেশি কর্মী রয়েছেন, যার প্রায় ৪ শতাংশ এই ছাঁটাইয়ের আওতায় পড়বে। অ্যামাজন জানিয়েছে, কিছু কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ পদে তারা নিয়োগ অব্যাহত রাখবে, তবে আগামী বছরেও কর্মী ছাঁটাই চলবে।

এর আগে গত জুনে অ্যামাজনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা অ্যান্ডি জ্যাসি জানিয়েছিলেন, জেনারেটিভ কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবহারের ফলে প্রতিষ্ঠানে কর্মীদের সংখ্যা কমতে থাকবে। তিনি কর্মীদের জানান, ‘বর্তমানে করা হচ্ছে এমন কিছু কাজের জন্য ভবিষ্যতে কম লোকের প্রয়োজন হবে এবং অন্য ধরনের কাজের জন্য আরও বেশি লোক দরকার হবে।’ ২০২১ সালে জেফ বেজোসের স্থলাভিষিক্ত হওয়ার পর থেকেই অ্যান্ডি জ্যাসি পুরো সংস্থাজুড়ে ব্যয় কমানোর জন্য কাজ করে যাচ্ছেন। ২০২২ থেকে ২০২৩ সালের মধ্যে ২৭ হাজার কর্মী ছাঁটাইয়ের পর অ্যামাজন আবারও কর্মী ছাঁটাইয়ের পথে হাঁটল।