মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে এক ‘প্রভাবশালী’ অধ্যায়ের সমাপ্তি

যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট ডিক চেনি ৮৪ বছর বয়সে মারা গেছেন। তাকে মার্কিন ইতিহাসের অন্যতম প্রভাবশালী ভাইস প্রেসিডেন্ট এবং ২০০৩ সালের ইরাক আগ্রাসনের অন্যতম প্রধান রূপকার হিসেবে বিবেচনা করা হয়। মঙ্গলবার তার পরিবারের পক্ষ থেকে এক বিবৃতিতে বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে।

চেনির পরিবার জানায়, নিউমোনিয়া ও হৃদরোগের জটিলতায় সোমবার (৩ নভেম্বর) রাতে তার মৃত্যু হয়। মৃত্যুকালে তার স্ত্রী, মেয়েসহ পরিবারের সদস্যরা পাশে ছিলেন।

রিপাবলিকান পার্টির এই রাজনীতিবিদ তার দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনে ওয়াইওমিং অঙ্গরাজ্যের কংগ্রেসম্যান এবং মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন। ২০০০ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে তৎকালীন টেক্সাসের গভর্নর জর্জ ডব্লিউ বুশ তাকে রানিংমেট হিসেবে বেছে নেন। নির্বাচনে জয়ী হয়ে বুশ প্রশাসনে তিনি ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসেবে যোগ দেন।

২০০১ থেকে ২০০৯ সাল পর্যন্ত ভাইস প্রেসিডেন্ট থাকাকালীন চেনি প্রেসিডেন্টের ক্ষমতা বাড়াতে সক্রিয় ভূমিকা রাখেন। ওয়াটারগেট কেলেঙ্কারির পর থেকে তিনি মনে করতেন, প্রেসিডেন্টের ক্ষমতা সংকুচিত হয়েছে। ভাইস প্রেসিডেন্টের দপ্তরে তিনি একটি জাতীয় নিরাপত্তা দল গঠন করেন, যা প্রায়শই প্রশাসনের ভেতরে একটি পৃথক শক্তি কেন্দ্র হিসেবে কাজ করত।

চেনি ২০০৩ সালে ইরাক আগ্রাসনের একজন শক্তিশালী সমর্থক ছিলেন। তিনি গণবিধ্বংসী অস্ত্র থাকার অভিযোগ তুলে এই হামলার পক্ষে অবস্থান নেন, যদিও পরে ইরাকে তেমন কোনো অস্ত্রের অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যায়নি। এছাড়া, সন্ত্রাসবাদের সন্দেহভাজনদের জিজ্ঞাসাবাদের সময় ‘ওয়াটারবোর্ডিং’-এর মতো কঠোর পদ্ধতির পক্ষে তার দৃঢ় সমর্থন ছিল, যা পরবর্তীতে নির্যাতনের কৌশল হিসেবে সমালোচিত হয়। এ নিয়ে তৎকালীন পররাষ্ট্রমন্ত্রী কলিন পাওয়েল ও কন্ডোলিজা রাইসের মতো শীর্ষ কর্মকর্তাদের সঙ্গেও তার মতবিরোধ তৈরি হয়েছিল।

এর আগে ১৯৯০ সালে প্রথম উপসাগরীয় যুদ্ধের সময় তিনি তৎকালীন প্রেসিডেন্ট জর্জ এইচ. ডব্লিউ. বুশের প্রশাসনে প্রতিরক্ষামন্ত্রীর দায়িত্বে ছিলেন। সে সময় কুয়েত থেকে ইরাকি বাহিনীকে বিতাড়িত করতে পরিচালিত মার্কিন সামরিক অভিযানে তিনি নেতৃত্ব দেন।

সূত্র: রয়টার্স