ট্রাম্পের সঙ্গে আলোচনায় আগ্রহী নিউ ইয়র্কের নতুন মেয়র, তবে দিলেন হুঁশিয়ারিও

নিউ ইয়র্ক সিটির নবনির্বাচিত মেয়র জোহরান মামদানি নগরবাসীর স্বার্থে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে কাজ করার আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। তবে তিনি স্পষ্ট করে দিয়েছেন, শহরবাসীর স্বার্থ ক্ষুণ্ণ হয় এমন কোনো আলোচনার প্রস্তাব তিনি প্রত্যাখ্যান করবেন। বুধবার সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এই মন্তব্য করেন।

মামদানি বলেন, ‘নিউ ইয়র্কবাসীর জীবনযাত্রার ব্যয় কমানোর প্রতিশ্রুতিসহ বিভিন্ন বিষয়ে একসঙ্গে কাজ করার উপায় নিয়ে আমি প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সঙ্গে কথা বলতে আগ্রহী।’ তবে হোয়াইট হাউস থেকে তাকে এখনো বিজয়ের জন্য অভিনন্দন জানানো হয়নি বলেও উল্লেখ করেন তিনি। একই সঙ্গে, নগরবাসীর জন্য ক্ষতিকর হতে পারে এমন যেকোনো আলোচনার বিষয়ে তিনি কঠোর অবস্থান ব্যক্ত করেন। তিনি বলেন, ‘কিন্তু যদি সেই আলোচনার মাধ্যমে সাধারণ মানুষের ক্ষতি হয়, তাহলে আমি তার বিরুদ্ধে সর্বশক্তি দিয়ে লড়ব, কারণ আমার কাজ এই শহরের সেবা করা।’

নবনির্বাচিত মেয়র কর্মজীবী মানুষের সমস্যা সমাধানে রিপাবলিকানদের অনীহার সমালোচনা করেন। তিনি বলেন, শুধু সংকট চিহ্নিত করাই যথেষ্ট নয়, সমাধানও দিতে হবে। মামদানির মতে, ‘সারা দেশের রিপাবলিকানরা ভয় পাচ্ছেন যে আমরা আমাদের দেওয়া প্রতিশ্রুতিগুলো বাস্তবায়ন করে ফেলব, আর এই পার্থক্যটা তারা সহ্য করতে পারবেন না।’

তিনি জানান, তার প্রশাসন ইহুদিবিদ্বেষের বিষয়টিকে ‘অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে’ দেখবে। তিনি প্রতিশ্রুতি দিয়ে বলেন, ‘শহরজুড়ে ইহুদিবিদ্বেষের এই অভিশাপের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে আমার প্রশাসন নিউ ইয়র্কের ইহুদি বাসিন্দাদের পাশে দৃঢ়ভাবে দাঁড়াবে।’ তিনি ইহুদি সম্প্রদায়কে শুধু সুরক্ষাই নয়, বরং তাদের ঐতিহ্য ও সংস্কৃতিকে ‘উদযাপন ও মূল্যায়ন’ করার জন্যও একসঙ্গে কাজ করার অঙ্গীকার করেন।

আইনের শাসনের ওপর জোর দিয়ে মামদানি বলেন, আইনের চোখে সবাইকে সমানভাবে দেখা হবে। তিনি আরও বলেন, এমন এক সময়ে যখন কেউ কেউ মনে করেন নির্দিষ্ট কিছু মানুষ আইন লঙ্ঘন করতে পারে, তখন তার প্রশাসন সব নিউ ইয়র্কবাসীর জন্য ‘সততা, স্বচ্ছতা ও দৃঢ়তার এক নতুন যুগ’ নিয়ে আসবে।

মামদানি নিশ্চিত করেছেন যে বর্তমান মেয়র এরিক অ্যাডামসের প্রশাসনের সঙ্গে তিনি ক্ষমতা হস্তান্তরের প্রক্রিয়াটি মসৃণ করতে আলোচনা চালিয়ে যাবেন। তিনি ঘোষণা করেন, ক্ষমতা হস্তান্তর প্রক্রিয়াটি পরিচালনা করবেন ইলানা লিওপোল্ড, যার নগর সরকারে কাজ করার অভিজ্ঞতা রয়েছে। তার ক্ষমতা হস্তান্তর প্রক্রিয়ার সহ-সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছেন কয়েকজন বিশিষ্ট নারী। তাদের মধ্যে রয়েছেন ফেডারেল ট্রেড কমিশনের সাবেক চেয়ার লিনা খান, সাবেক প্রথম ডেপুটি মেয়র মারিয়া তোরেস স্প্রিংগার, ইউনাইটেড ওয়ের প্রেসিডেন্ট ও প্রধান নির্বাহী গ্রেস বনিলা এবং স্বাস্থ্য ও মানবসেবা বিষয়ক সাবেক ডেপুটি মেয়র মেলানি হার্টজগ।