সিরিয়া: দামেস্কে মার্কিন ঘাঁটি স্থাপন নিয়ে রয়টার্সের প্রতিবেদন ‘ভিত্তিহীন’

সিরিয়ার রাজধানী দামেস্কে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক ঘাঁটি স্থাপনের পরিকল্পনা নিয়ে প্রকাশিত রয়টার্সের একটি প্রতিবেদনকে ‘ভিত্তিহীন’ বলে নাকচ করে দিয়েছে দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। বৃহস্পতিবার মন্ত্রণালয়টির একজন কর্মকর্তা জানান, এই খবরের কোনো সত্যতা নেই।

রাষ্ট্র পরিচালিত সিরিয়ান আরব নিউজ এজেন্সিকে (সানা) দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ওই কর্মকর্তা জানান, বর্তমানে সিরিয়ার বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থানে পরিবর্তন দেখা যাচ্ছে। দেশটি সিরিয়ার কেন্দ্রীয় সরকারের সঙ্গে সরাসরি কাজ করতে আগ্রহী এবং সিরিয়াকে ঐক্যবদ্ধ করার প্রচেষ্টাকে সমর্থন করছে। পাশাপাশি বিভক্তির যেকোনো উদ্যোগ তারা প্রত্যাখ্যান করছে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।

সানার প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, ওই কর্মকর্তা নিশ্চিত করেছেন যে সিরিয়া তার নতুন যুগে স্থিতিশীলতা সুসংহত করতে এবং জাতীয় সার্বভৌমত্ব ও পারস্পরিক শ্রদ্ধার ভিত্তিতে সহযোগিতা জোরদার করার পথে দৃঢ়ভাবে এগিয়ে চলেছে।

বৃহস্পতিবার রয়টার্সের প্রকাশিত এক প্রতিবেদনের প্রতিক্রিয়ায় সিরীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এই মন্তব্য করে। প্রতিবেদনে পশ্চিমা ও সিরীয় প্রতিরক্ষা কর্মকর্তাসহ ছয়টি সূত্রের বরাত দিয়ে দাবি করা হয়, ইসরায়েলের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় একটি নিরাপত্তা চুক্তির অংশ হিসেবে ওয়াশিংটন দামেস্ক আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের একাংশকে সামরিক ঘাঁটি হিসেবে ব্যবহারের পরিকল্পনা করছে। এই ঘাঁটিতে মার্কিন সেনা ও পর্যবেক্ষক দল মোতায়েন করা হবে, যারা সিরিয়া-ইসরায়েল সীমান্তে অসামরিকীকরণ পরিস্থিতি ও নিরাপত্তা পর্যবেক্ষণ করবে।

রয়টার্স একজন সিরীয় প্রতিরক্ষা কর্মকর্তার বরাত দিয়ে জানায়, রানওয়ের কার্যকারিতা পরীক্ষার জন্য মার্কিন বাহিনী সি-১৩০ পরিবহন বিমানে করে ওই ঘাঁটিতে প্রবেশ করেছিল। আরেকজন নিরাপত্তাকর্মী বার্তা সংস্থাটিকে জানান, মাঠপর্যায়ের পরীক্ষার অংশ হিসেবে সেখানে মার্কিন বিমান অবতরণ করেছে। একটি পশ্চিমা সামরিক সূত্রের বরাতে আরও বলা হয়, মার্কিন প্রতিরক্ষা সদর দপ্তর পেন্টাগন গত দুই মাসে বিমানঘাঁটিটিতে বেশ কয়েকটি গোয়েন্দা অভিযান চালিয়েছে এবং তাদের পর্যবেক্ষণ অনুযায়ী, দীর্ঘ রানওয়েটি ব্যবহারের জন্য প্রস্তুত রয়েছে।

তবে মার্কিন প্রশাসনের একজন কর্মকর্তা এই প্রতিবেদনের সত্যতা নিশ্চিত করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন। তিনি বলেন, জঙ্গি গোষ্ঠী আইএসকে কার্যকরভাবে মোকাবিলা করার জন্য সিরিয়ায় নিজেদের প্রয়োজনীয় উপস্থিতি যুক্তরাষ্ট্র ক্রমাগত মূল্যায়ন করছে। নিরাপত্তার কারণে বাহিনীর অবস্থান বা সম্ভাব্য অবস্থান সম্পর্কে কোনো মন্তব্য করা হয় না বলেও তিনি উল্লেখ করেন।

এদিকে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প আগামী ১০ নভেম্বর ওয়াশিংটনে সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট আহমেদ আল-শারার সঙ্গে বৈঠক করবেন বলে জানা গেছে। এটি হবে হোয়াইট হাউসে সিরিয়ার কোনো রাষ্ট্রনেতার প্রথম সফর। হোয়াইট হাউসের প্রেস সচিব ক্যারোলিন লিভিট জানিয়েছেন, মধ্যপ্রাচ্যে শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের যে প্রচেষ্টা, এই বৈঠকটি তারই অংশ।