ফ্লাইট বিপর্যয়: যুক্তরাষ্ট্রে পরিস্থিতি আরও অবনতির আশঙ্কা

যুক্তরাষ্ট্রে সরকারি অচলাবস্থার কারণে ফ্লাইট চলাচলে বিপর্যয় নেমে এসেছে, যা আরও ভয়াবহ রূপ নিতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। দেশটির পরিবহনমন্ত্রী শন ডাফি জানিয়েছেন, শুক্রবারের মধ্যে ফ্লাইট চলাচল ১০ শতাংশ পর্যন্ত কমানো হবে, যার ফলে ছুটির মৌসুমে হাজারো মার্কিন নাগরিক পরিবারের সঙ্গে মিলিত হতে পারবেন না।

রবিবার সিএনএনকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ডাফি বলেন, ‘পরিস্থিতি কেবল আরও খারাপ হতে যাচ্ছে।’ তিনি উল্লেখ করেন, শনিবার আটলান্টার ২২ জন কন্ট্রোলারের মধ্যে ১৮ জনই কাজে যোগ দেননি এবং দেশজুড়ে ৮১টি ক্ষেত্রে কর্মী সংকট দেখা দিয়েছে।

ফেডারেল এভিয়েশন অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (এফএএ)-এর নির্দেশনা অনুযায়ী, গত সপ্তাহান্তে ফ্লাইট চলাচল ৪ শতাংশ কমানো হয়, যার ফলে শুক্র থেকে রবিবার পর্যন্ত দুই হাজারের বেশি ফ্লাইট বাতিল হয়েছে। এই হার মঙ্গলবার নাগাদ ৬ শতাংশ, বৃহস্পতিবার ৮ শতাংশ এবং শুক্রবারের মধ্যে ১০ শতাংশে উন্নীত হবে। ছুটির দিনে কতজন মার্কিন নাগরিক ভোগান্তিতে পড়বেন এমন প্রশ্নের জবাবে ডাফি জানান, এই সংখ্যাটি ‘যথেষ্ট বড়’ হবে এবং পর্যাপ্ত ফ্লাইট না থাকায় তাদের অনেকেই বিমানে চড়তে পারবেন না।

পরিবহনমন্ত্রী এয়ার ট্র্যাফিক কন্ট্রোলারদের ক্রমবর্ধমান সংকটের ওপর জোর দিয়ে বলেন, তিনি বর্তমানে ‘এক থেকে দুই হাজার কন্ট্রোলারের’ ঘাটতিতে রয়েছেন। অচলাবস্থার আগে যেখানে প্রতিদিন চারজন কন্ট্রোলার অবসরে যেতেন, এখন সেই সংখ্যা দিনে ‘১৫ থেকে ২০ জনে’ দাঁড়িয়েছে। ডাফি বলেন, ‘সরকার পুনরায় চালু হওয়ার পরেও এই সংকট বিমান চলাচলের ওপর দীর্ঘস্থায়ী প্রভাব ফেলবে।’

নিরাপত্তা প্রসঙ্গে ডাফি জানান, কর্মী সংকটের সময় কর্তৃপক্ষ উড়োজাহাজ চলাচল ধীর করে এবং ফ্লাইট বিলম্বিত করে নিরাপত্তা বজায় রাখতে ‘অতিরিক্ত কাজ’ করছে। তবে তিনি কংগ্রেসকে ‘সরকার পুনরায় চালু করতে ভোট দেওয়ার’ আহ্বান জানান, যাতে ‘যুক্তরাষ্ট্র আবার স্বাভাবিকভাবে কার্যকর হতে পারে।’

গত ১ অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া এই অচলাবস্থার কারণে এয়ার ট্র্যাফিক কন্ট্রোলার এবং ট্রান্সপোর্টেশন সিকিউরিটি অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (টিএসএ) কর্মকর্তাদের মতো কেন্দ্রীয় কর্মচারীরা বেতন ছাড়াই কাজ করতে বাধ্য হচ্ছেন। চলমান অচলাবস্থাটি ইতোমধ্যে ৪০ দিন অতিক্রম করে যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে দীর্ঘতম অচলাবস্থায় পরিণত হয়েছে। এর আগে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রথম মেয়াদে ২০১৮ সালের ডিসেম্বর থেকে ২০১৯ সালের জানুয়ারি পর্যন্ত ৩৫ দিনের অচলাবস্থা ছিল দীর্ঘতম। সিনেটে রিপাবলিকান ও ডেমোক্র্যাটদের মধ্যে অচলাবস্থা নিরসনে তহবিল বরাদ্দের বিষয়ে মতবিরোধ থাকায় কোনো সমাধান এখনো মেলেনি।