ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মের অন্ধকার দিক: ইইউর প্রতিবেদনে ভয়াবহ ঝুঁকির চিত্র

ইউরোপীয় ইউনিয়নজুড়ে (ইইউ) বড় বড় অনলাইন প্ল্যাটফর্ম ও সার্চ ইঞ্জিনগুলোতে সৃষ্ট বিভিন্ন পদ্ধতিগত ঝুঁকি তুলে ধরে প্রথমবারের মতো একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে ইউরোপীয় কমিশন। প্রতিবেদনে অবৈধ কনটেন্টের বিস্তার, মৌলিক অধিকারের প্রতি হুমকি এবং অপ্রাপ্তবয়স্কদের সুরক্ষা ও মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে ক্রমবর্ধমান উদ্বেগের কথা বলা হয়েছে। ব্রাসেলস থেকে বুধবার এই ‘ডিজিটাল পরিষেবা আইন (ডিএসএ) পদ্ধতিগত ঝুঁকি প্রতিবেদন’ প্রকাশ করা হয়।

প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, অনলাইন প্ল্যাটফর্মগুলোকে জনস্বাস্থ্যবিষয়ক ভুল তথ্য, অনলাইনে ক্ষতিকর বা অবৈধ পণ্য বিক্রি এবং বড় পরিসরে সমন্বিত অপপ্রচারের মতো পুনরাবৃত্তিমূলক ঝুঁকির মুখোমুখি হতে হচ্ছে। নিয়ন্ত্রকরা ‘জেনারেটিভ এআই’-এর অপব্যবহারের বিষয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন, যার মধ্যে বিকৃত মিডিয়া বা শিশু যৌন নিপীড়নমূলক উপাদান তৈরির মতো বিষয়গুলোও রয়েছে।

প্রতিবেদনের একটি বড় অংশজুড়ে অপ্রাপ্তবয়স্কদের বিভিন্ন ঝুঁকির কথা বলা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে শিশু যৌন নিপীড়নমূলক উপাদান (সিএসএএম), অনলাইনে শিশুদের সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপন করে যৌন হয়রানির চেষ্টা (গ্রুমিং), যৌন হয়রানির উদ্দেশ্যে জবরদস্তি (সেক্সটোরশন), সাইবারবুলিং এবং সামাজিক মাধ্যমের ক্ষতিকর চ্যালেঞ্জ। নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিরাও শিশু ইনফ্লুয়েন্সারদের বাণিজ্যিক শোষণ এবং তরুণ ব্যবহারকারীদের জন্য সহজ রিপোর্টিং ব্যবস্থার অভাব নিয়ে উদ্বেগ জানিয়েছেন।

মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর এসব প্ল্যাটফর্মের প্রভাবও প্রতিবেদনে তুলে ধরা হয়েছে। এতে সামাজিক মাধ্যমের আসক্তির মতো ব্যবহার, নিজেকে আঘাত করা ও আত্মহত্যা সম্পর্কিত বিষয়বস্তুর সংস্পর্শে আসা এবং ক্রমাগত উদ্বেগজনক খবর দেখার ফলে সৃষ্ট মানসিক চাপের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। অতিরিক্ত স্ক্রিন টাইম এবং অবাস্তব শারীরিক সৌন্দর্যের মানদণ্ডকেও শারীরিক ও মানসিক ক্ষতির কারণ হিসেবে উল্লেখ করা হয়।

ইউরোপীয় কমিশন জানিয়েছে, এই প্রথম সংস্করণটি ইইউতে পদ্ধতিগত ঝুঁকি পর্যবেক্ষণ এবং অনলাইন প্ল্যাটফর্মগুলোর স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি উন্নত করার জন্য একটি নির্দেশক হিসেবে কাজ করবে।