রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ নিরসনে ‘গোপনে’ কাজ করছে যুক্তরাষ্ট্র

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ অবসানে যুক্তরাষ্ট্র একটি নতুন শান্তি প্রস্তাব নিয়ে গোপনে কাজ করছে। মার্কিন বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ গত এক মাস ধরে এই পরিকল্পনা নিয়ে কাজ করছেন, যেখানে রাশিয়া ও ইউক্রেন উভয় পক্ষের মতামত নেওয়া হয়েছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক জ্যেষ্ঠ মার্কিন কর্মকর্তা বৃহস্পতিবার (২০ নভেম্বর) আনাদোলুকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

ওই কর্মকর্তা জানান, বিশেষ দূত উইটকফ গত এক মাস ধরে এ পরিকল্পনা নিয়ে গোপনে কাজ করছেন। যুদ্ধ শেষ করতে কোন কোন শর্ত গ্রহণযোগ্য হতে পারে, তা নিয়ে ইউক্রেন এবং রাশিয়া উভয় পক্ষের মতামত তিনি নিয়েছেন। তিনি আরও জানান, পরিকল্পনাটি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে জানানো হয়েছে এবং তিনি এতে সমর্থন দিয়েছেন।

হোয়াইট হাউসের মুখপাত্র ক্যারোলিন লেভিট বলেন, ‘ট্রাম্প স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, তিনি যুদ্ধে ইতি টানতে চান এবং শান্তি চুক্তিতে অঙ্গীকারবদ্ধ না হওয়ায় তিনি দুই পক্ষের প্রতিই বিরক্ত। তবু প্রেসিডেন্ট ও তার দল হাল ছাড়েননি। যুক্তরাষ্ট্র এমন একটি বিস্তারিত ও গ্রহণযোগ্য পরিকল্পনা নিয়ে কাজ করছে, যা দুই পক্ষের জন্যই গ্রহণযোগ্য হবে এবং স্থায়ী শান্তি নিশ্চিত করবে।’

বৃহস্পতিবার ইউক্রেন আনুষ্ঠানিকভাবে ‘প্রস্তাবের খসড়া’ পাওয়ার কথা স্বীকার করেছে। দেশটির প্রেসিডেন্টের কার্যালয় থেকে জানানো হয়, প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি তাদের মৌলিক অবস্থানগুলো তুলে ধরেছেন এবং আলোচনার মাধ্যমে পরিকল্পনার বিভিন্ন দিক নিয়ে কাজ করতে সম্মত হয়েছেন।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ‘ইউক্রেন ট্রাম্পের যুদ্ধ সমাপ্তির প্রস্তাবকে সমর্থন জানায় এবং এ বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রসহ ইউরোপ ও বিশ্বের অন্যান্য অংশীদারদের সঙ্গে কাজ করতে প্রস্তুত।’ জেলেনস্কি খুব শিগগির ‘শান্তির মূল শর্ত’ এবং ‘কূটনৈতিক সম্ভাবনা’ নিয়ে ট্রাম্পের সঙ্গে আলোচনা করবেন বলে জানানো হয়েছে।

হোয়াইট হাউসের মুখপাত্র লেভিট পরে শান্তি প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা চলমান থাকার বিষয়টি নিশ্চিত করলেও পরিকল্পনার বিস্তারিত বিবরণ দিতে রাজি হননি। যুক্তরাষ্ট্রের শান্তি পরিকল্পনা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘এটি রাশিয়া ও ইউক্রেন—দুই পক্ষের জন্যই একটি ভালো পরিকল্পনা। উভয় পক্ষের কাছেই এটি গ্রহণযোগ্য হবে। আমরা এটিকে বাস্তবায়ন করতে কঠোর পরিশ্রম করছি।’

তিনি আরও জানান, বৃহস্পতিবার প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কির সঙ্গে রুদ্ধদ্বার বৈঠকের পর যুক্তরাষ্ট্রের সেনাসচিব ড্যানিয়েল ড্রিসকলকে বেশ আশাবাদী দেখা গেছে।

প্রস্তাবটি ট্রাম্প প্রশাসনের যুদ্ধ শেষ করার নতুন উদ্যোগের অংশ, যেখানে রাশিয়ার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে তৈরি করা একটি ২৮-দফা পরিকল্পনাও রয়েছে। তবে এতে ইউক্রেনকে রাশিয়া-নিয়ন্ত্রিত ভূখণ্ড ছেড়ে দেওয়া এবং সেনাবাহিনীর আকার অর্ধেক কমানোর মতো শর্ত থাকায় ইউরোপীয় মিত্রদের মধ্যে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে।