গাজার প্রসঙ্গ এড়িয়ে যাওয়ায় ইউরোভিশন কর্তাকে ধুয়ে দিলেন স্প্যানিশ সম্প্রচার প্রধান

স্পেনের সরকারি সম্প্রচারমাধ্যম আরটিভিই-এর প্রধান হোসে পাবলো লোপেজ ইউরোভিশন গানের প্রতিযোগিতার পরিচালক মার্টিন গ্রিনের কঠোর সমালোচনা করেছেন। ইউরোপিয়ান ব্রডকাস্টিং ইউনিয়ন বা ইবিইউ ইতিহাসের সবচেয়ে খারাপ খ্যাতিনাশক সংকটের মুখে পড়লেও ভক্তদের উদ্দেশ্যে লেখা খোলা চিঠিতে গাজা বা ইসরায়েলের কথা উল্লেখ না করায় তিনি বৃহস্পতিবার এই ক্ষোভ প্রকাশ করেন।

গাজা যুদ্ধের মধ্যে ইসরায়েলের অব্যাহত অংশগ্রহণের প্রতিবাদে স্পেন, নেদারল্যান্ডস, স্লোভেনিয়া, আয়ারল্যান্ড ও আইসল্যান্ড—এই পাঁচটি দেশের জাতীয় সম্প্রচারমাধ্যম প্রতিযোগিতা থেকে সরে দাঁড়ায়। ক্রমবর্ধমান এই উত্তেজনার মধ্যেই গ্রিন ওই চিঠিটি প্রকাশ করেন।

লোপেজ বলেন, পরিচালকের বার্তা পরিস্থিতির গুরুত্ব তুলে ধরতে ব্যর্থ হয়েছে। মার্কিন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে তিনি লেখেন, ‘গ্রিন তার চিঠিতে গাজা বা ইসরায়েলের কথা উল্লেখ করেননি। তিনি মধ্যপ্রাচ্যের এমন ঘটনার কথা বলেছেন যা তাকে আলোড়িত করেছে। গণহত্যা কি নিছকই কোনো ঘটনা?’

লোপেজ মন্তব্য করেন, ভক্তদের প্রতি গ্রিনের প্রধান আশ্বাস ছিল যে তিনি তাদের কথা ‘শোনেন’। এ বিষয়ে তিনি বলেন, ‘দৃশ্যত, তার ভূমিকা শোনা পর্যন্তই সীমাবদ্ধ।’ এছাড়া ‘অতীত মানেই অতীত’ এবং এখন থেকে প্রতিযোগিতার নিয়ম কার্যকর হবে—গ্রিনের এমন দাবিরও সমালোচনা করেন তিনি।

লোপেজ প্রশ্ন তোলেন, ‘গত দুই বছরে ইসরায়েলের নিয়ম লঙ্ঘনের কী হবে? সেগুলো কি কেবল ধামাচাপা দেওয়া হয়েছে?’ ইবিইউ তার ভূ-রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক জোট অনুযায়ী বেছে বেছে নিয়ম প্রয়োগ করে কি না, তা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন তিনি।

তিনি আরও উল্লেখ করেন, যেদিন নতুন নিয়ম গৃহীত হয়, ঠিক একই রাতে ইসরায়েলি কর্মকর্তারা প্রকাশ্যে জানিয়েছিলেন যে প্রতিযোগিতায় দেশটির উপস্থিতি নিশ্চিত করতে তারা প্রতিনিধিদলগুলোকে রাজনৈতিকভাবে প্রভাবিত করেছেন। লোপেজ প্রশ্ন রাখেন, ‘আমরা আর কী দেখব?’

চিঠিতে গ্রিন লিখেছিলেন, অনেক ভক্ত চান ইউরোভিশন ভূ-রাজনৈতিক বিষয়ে স্পষ্ট অবস্থান নিক। তবে তিনি জোর দিয়ে বলেন, ‘ইউরোভিশন গানের প্রতিযোগিতা মানুষকে একত্রিত করার একমাত্র উপায় হলো, আমাদের সবার আগে নিজেদের নিয়ম দ্বারা পরিচালিত হওয়া নিশ্চিত করা।’

ইবিইউ সদস্যরা সম্প্রতি ২০২৬ সালের প্রতিযোগিতায় ইসরায়েলের অংশগ্রহণের বিষয়ে ভোট না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়, যার ফলে দেশটি কার্যত প্রতিযোগিতায় থাকার সুযোগ পায়। এর প্রতিবাদে স্পেনের আরটিভিই, নেদারল্যান্ডসের এনপিও, স্লোভেনিয়ার আরটিভিএসএলও, আয়ারল্যান্ডের আরটিই এবং আইসল্যান্ডের আরইউভি ইউরোভিশন থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দেয়।