ট্রাম্প: থাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়া যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছে

থাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়ার নেতারা নতুন করে শুরু হওয়া সংঘাত বন্ধ করতে এবং আগের শান্তি চুক্তিতে ফিরে যেতে সম্মত হয়েছেন বলে জানিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। শুক্রবার তিনি এই তথ্য জানান। ট্রাম্পের মধ্যস্থতায় এর আগে দুই দেশের মধ্যে ওই শান্তি চুক্তিটি হয়েছিল।

নিজের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে ট্রাম্প জানান, থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী আনুতিন চার্নভিরাকুল এবং কম্বোডিয়ার প্রধানমন্ত্রী হুন মানাতের সঙ্গে তার ‘অত্যন্ত ফলপ্রসূ আলোচনা’ হয়েছে। এরই ফলে এই সমঝোতায় পৌঁছানো সম্ভব হয়েছে।

ট্রাম্প বলেন, ‘তারা আজ সন্ধ্যা থেকে সব ধরনের গোলাগুলি বন্ধ করতে এবং আমার ও মালয়েশিয়ার মহান প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিমের সহায়তায় করা মূল শান্তি চুক্তিতে ফিরে যেতে সম্মত হয়েছেন।’

তিনি আরও বলেন, ‘রাস্তার পাশে যে বোমা বিস্ফোরণে অসংখ্য থাই সেনা নিহত ও আহত হয়েছিলেন, সেটি মূলত একটি দুর্ঘটনা ছিল। তবে থাইল্যান্ড এর খুব কড়া জবাব দিয়েছিল। বর্তমানে উভয় দেশই শান্তির পথে হাঁটতে এবং যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্য অব্যাহত রাখতে প্রস্তুত।’

বড় কোনো যুদ্ধের আশঙ্কা নাকচ করে দিয়ে ট্রাম্প বলেন, ‘একটি বড় যুদ্ধের দিকে মোড় নিতে যাওয়া পরিস্থিতি সমাধানে আনুতিন এবং হুন মানাতের সঙ্গে কাজ করতে পারা আমার জন্য সম্মানের।’

কর্মকর্তা ও স্থানীয় সংবাদমাধ্যমের তথ্য অনুযায়ী, সোমবার থেকে শুরু হওয়া এই সীমান্ত সংঘাতে মৃতের সংখ্যা ২৩-এ পৌঁছেছে। এছাড়া সীমান্তের উভয় পাশের প্রায় সাত লাখ মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছেন।

গত অক্টোবরে কুয়ালালামপুরে ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিমের উপস্থিতিতে দুই দেশ একটি শান্তি চুক্তি স্বাক্ষর করেছিল। তবে একটি সীমান্ত প্রদেশে ল্যান্ডমাইন বিস্ফোরণে থাই সেনারা গুরুতর আহত হওয়ার পর ওই চুক্তিটি স্থগিত হয়ে যায়। প্রতিবেশী এই দুই দেশের দীর্ঘদিনের সীমান্ত বিরোধের জেরে বারবার সংঘাতের ঘটনা ঘটেছে। এর আগে জুলাই মাসে ঘটা সংঘাতে অন্তত ৪৮ জন নিহত হয়েছিলেন।

২০২৫ সালের অ্যাসোসিয়েশন অব সাউথ ইস্ট এশিয়ান নেশনসের (আসিয়ান) সভাপতি ও মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিম শুক্রবার ফেসবুকে এক বিবৃতিতে জানান, তিনি কম্বোডিয়া-থাইল্যান্ড সংঘাত নিয়ে ট্রাম্পের সঙ্গে আলোচনা করেছেন। এছাড়া দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক ও পারস্পরিক স্বার্থসংশ্লিষ্ট বৈশ্বিক বিভিন্ন ইস্যু নিয়েও তাদের কথা হয়েছে।

আনোয়ার ইব্রাহিম জানান, আসিয়ানের প্রতিবেশীসুলভ চেতনার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে পরিস্থিতি শান্ত করতে, বেসামরিক নাগরিকদের সুরক্ষা দিতে এবং আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনার প্রচেষ্টায় সহায়তা করতে কুয়ালালামপুর প্রস্তুত। পরিস্থিতি মূল্যায়ন ও উত্তেজনা প্রশমনে সহায়তা করতে মালয়েশিয়া শিগগিরই আসিয়ান পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের একটি বিশেষ বৈঠক আহ্বান করবে বলেও জানান তিনি।