হাঙ্গেরি: রাশিয়ার জব্দকৃত সম্পদ ব্যবহার ‘যুদ্ধ ঘোষণার’ শামিল

ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) জব্দ করা রাশিয়ার সম্পদ বাজেয়াপ্ত করার পরিকল্পনাকে ‘যুদ্ধ ঘোষণা’ হিসেবে অভিহিত করেছেন হাঙ্গেরির প্রধানমন্ত্রী ভিক্টর অরবান। শনিবার তিনি এই মন্তব্য করেন বলে ম্যাগয়ার নেমজেট সংবাদপত্রে প্রকাশিত প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।

অরবান ইউরোপীয় নেতাদের কড়া সমালোচনা করেছেন। বিশেষ করে জার্মান চ্যান্সেলর ফ্রিডরিখ মের্ৎস, ইউরোপিয়ান পিপলস পার্টির নেতা ম্যানফ্রেড ওয়েবার এবং ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ভন ডার লিয়েনের নাম উল্লেখ করেন তিনি। হাঙ্গেরির প্রধানমন্ত্রী বলেন, ইউক্রেন যুদ্ধে অর্থায়নের জন্য প্রতিটি দেশের সক্ষমতা যাচাই না করেই তারা আর্থিক বাজার থেকে ঋণ নেওয়াকে অগ্রাধিকার দিচ্ছেন।

অরবান বলেন, ‘সেখানে রাশিয়ার অর্থ রয়েছে, অথবা সদস্য রাষ্ট্রগুলোর কাছ থেকে অর্থ সংগ্রহের সম্ভাবনা রয়েছে, যা বড় ঋণের ভিত্তি হিসেবে কাজ করবে।’ তিনি আরও জানান, হাঙ্গেরিকে পাশ কাটিয়ে রাশিয়ার সম্পদ ব্যবহারের যেকোনো প্রচেষ্টার বিরোধিতা করবে তার দেশ।

তিনি বলেন, ‘আমি ব্রাসেলসে লড়াই করতে যাচ্ছি। কারণ তারা হাঙ্গেরিকে পাশ কাটিয়ে রাশিয়ার সম্পদের দিকে হাত বাড়াচ্ছে। এটি যুদ্ধ ঘোষণার শামিল। আমি এমন কিছু আগে কখনো দেখিনি, যেখানে ২০০ থেকে ৩০০ বিলিয়ন ইউরো (২৩৫-৩৫২ বিলিয়ন ডলার) মূল্যের সম্পদ কোনো পরিণতি ছাড়াই হারিয়ে যাচ্ছে।’

হাঙ্গেরির প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ‘যুদ্ধ শুরুর সময় বেলজিয়ামে রাশিয়ার অর্থ জব্দ করা হয়েছিল এবং তারা এখন সেই অর্থে হাত দিতে চায়। এটি অত্যন্ত অস্বাভাবিক এবং বিপজ্জনক একটি বিষয়।’

এদিকে ইতালির উপ-প্রধানমন্ত্রী মাত্তেও সালভিনি সতর্ক করে বলেছেন, রাশিয়ার সম্পদ জব্দ করা ‘ঝুঁকিপূর্ণ ও অবিবেচক’ কাজ। তিনি উল্লেখ করেন, ইতালির ৩১৪টি কোম্পানি রাশিয়ায় কার্যক্রম চালাচ্ছে, যা রাজস্ব ও কর্মসংস্থান তৈরি করছে। আনসা নিউজ এজেন্সির প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

সালভিনি বলেন, ‘ইতালীয় সরকার বিষয়টি স্পষ্ট করে ভালো করেছে। কারণ, দিনশেষে আমরা একটি মুক্ত বাজারে আছি, আমরা রাশিয়ার সঙ্গে যুদ্ধে লিপ্ত নই। আমার মনে হচ্ছে ব্রাসেলস আগুন নিয়ে খেলছে।’

ইউক্রেনকে ঋণ দেওয়ার জন্য ইইউ রাশিয়ার জব্দ করা রাষ্ট্রীয় সম্পদ ব্যবহারের পরিকল্পনা করছে। তবে বেলজিয়ামসহ কয়েকটি সদস্য রাষ্ট্র এ নিয়ে আইনি উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। কারণ অধিকাংশ সম্পদ ব্রাসেলসের ইউরোক্লিয়ারে জমা রয়েছে। রাশিয়ার কেন্দ্রীয় ব্যাংক এই পরিকল্পনাকে অবৈধ বলে অভিহিত করেছে এবং নিজেদের স্বার্থ রক্ষায় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার অধিকার তাদের রয়েছে বলে জানিয়েছে।

শুক্রবার ইউরোপীয় জোটটি রাশিয়ার সম্পদ ‘অনির্দিষ্টকালের জন্য স্থবির’ করার পদক্ষেপ নিয়েছে। আগামী ১৮-১৯ ডিসেম্বর ব্রাসেলস সম্মেলনে ইইউ নেতারা ইউক্রেনকে অর্থ বরাদ্দের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন।