কৃষ্ণসাগরে নতুন অধ্যায়, পানির নিচেই ঘায়েল রুশ সাবমেরিন!

ইউক্রেন প্রথমবারের মতো সমুদ্রের তলদেশে চালিত ড্রোন (আন্ডারওয়াটার ড্রোন) ব্যবহার করে রাশিয়ার একটি সাবমেরিনে হামলা চালিয়েছে বলে দাবি করেছে। সোমবার ইউক্রেনের কর্মকর্তারা জানান, রুশ নৌবাহিনীর কৃষ্ণসাগরীয় অঞ্চলের নভোরোসিয়স্ক বন্দরে এই হামলা চালানো হয়। এই ঘটনায় সাবমেরিনটি অকার্যকর হয়ে পড়েছে বলে দাবি তাদের।

ইউক্রেনের নিরাপত্তা সংস্থা (এসবিইউ) জানিয়েছে, তাদের তৈরি ‘সি বেবি’ নামের একটি আন্ডারওয়াটার ড্রোন দিয়ে রাশিয়ার কিলো-শ্রেণির একটি অ্যাটাক সাবমেরিনে আঘাত হানা হয়েছে, যার ফলে সেটি গুরুতরভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ইউক্রেনের হামলার ঝুঁকি এড়াতে রাশিয়া অধিকৃত ক্রিমিয়ার সেভাস্তোপোল থেকে তাদের অনেক নৌযান নভোরোসিয়স্ক বন্দরে সরিয়ে নিয়েছিল।

এসবিইউ প্রকাশিত একটি ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, বন্দরের একটি জেটির কাছে পানির নিচ থেকে শক্তিশালী বিস্ফোরণ ঘটছে, যেখানে সাবমেরিনসহ অন্যান্য জাহাজ নোঙর করা ছিল। বার্তা সংস্থা রয়টার্স ভিডিওটির অবস্থান যাচাই করে নিশ্চিত করেছে যে, এটি নভোরোসিয়স্ক বন্দরেরই ঘটনা।

ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির উপদেষ্টা আলেকজান্ডার কামিশিন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে লিখেছেন, ‘ইতিহাসে প্রথমবারের মতো একটি আন্ডারওয়াটার ড্রোন সাবমেরিনকে নিষ্ক্রিয় করেছে।’

নৌবহর প্রায় না থাকা সত্ত্বেও ইউক্রেন সাম্প্রতিক সময়ে সমুদ্র-ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করে রাশিয়ার শক্তিশালী কৃষ্ণসাগর নৌবহরে একের পর এক হামলা চালিয়েছে। এর ফলে রাশিয়াকে সেভাস্তোপোল বন্দর থেকে নৌবহর সরাতে বাধ্য হতে হয়েছে।

ইউক্রেনের নৌবাহিনীর মুখপাত্র দিমিত্রো প্লেতেনচুক সংবাদমাধ্যমকে বলেন, সাবমেরিনকে আঘাত করা সবচেয়ে কঠিন লক্ষ্যবস্তু এবং এই অভিযান ইউক্রেন-রাশিয়া নৌযুদ্ধে ‘আরেকটি টার্নিং পয়েন্ট’। এই হামলা নৌযুদ্ধের সক্ষমতা সম্পর্কে প্রচলিত ধারণা আবারও পাল্টে দিয়েছে বলে তিনি মন্তব্য করেন।

তিনি আরও জানান, সাবমেরিনটি মেরামত করা রাশিয়ার জন্য কঠিন হবে। কারণ, সেটি পানির ওপরে এনে কাজ করতে হবে, যা পুনরায় হামলার ঝুঁকি তৈরি করবে। প্লেতেনচুকের দাবি, ‘নভোরোসিয়স্কে রাশিয়ার চারটি সাবমেরিনের মধ্যে একটি হারিয়েছে তারা।’

ক্ষতিগ্রস্ত ডিজেল-ইলেকট্রিক সাবমেরিনটি অন্তত চারটি কালিব্র-ধরনের ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র বহন করতে সক্ষম, যা রাশিয়া সম্প্রতি ইউক্রেনের বিদ্যুৎ গ্রিডে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি করতে ব্যবহার করেছে।

তবে রাশিয়া এই হামলার কথা স্বীকার করলেও কোনো জাহাজ বা সাবমেরিন ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি বলে দাবি করেছে। মস্কোর দাবি, ইউক্রেনের এই প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়েছে।