ফিলিস্তিনি শরণার্থী সংস্থায় বিদ্যুৎ-পানি বন্ধের ইসরায়েলি বিলের নিন্দা জর্ডানের

ফিলিস্তিনি শরণার্থীবিষয়ক জাতিসংঘের সংস্থার (ইউএনআরডব্লিউএ) কার্যালয়ে পানি ও বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করতে ইসরায়েলি পার্লামেন্টে উত্থাপিত একটি বিলের তীব্র নিন্দা জানিয়েছে জর্ডান। আম্মান এই পদক্ষেপকে আন্তর্জাতিক আইনের ‘সুস্পষ্ট লঙ্ঘন’ হিসেবে অভিহিত করেছে।

গত মঙ্গলবার ইসরায়েলি পার্লামেন্ট নেসেটের পররাষ্ট্র ও নিরাপত্তা বিষয়ক কমিটি ইউএনআরডব্লিউএর কার্যালয়ে পানি ও বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধের বিলটি ভোটাভুটির জন্য এগিয়ে নেয়। তেল আবিব জাতিসংঘের শরণার্থীবিষয়ক এই সংস্থাটির কার্যক্রম সীমিত করার যে প্রচারণা চালাচ্ছে, এটি তারই অংশ।

জর্ডানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানায়, এই পদক্ষেপ ইউএনআরডব্লিউএর গুরুত্বপূর্ণ মানবিক সেবা প্রদানের সক্ষমতাকে ক্ষুণ্ন করবে। ইসরায়েলি বিলটিকে আন্তর্জাতিক আইনের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন এবং জাতিসংঘের সংস্থাগুলোর বিশেষ অধিকার ও সুরক্ষার ওপর আঘাত হিসেবে বর্ণনা করা হয়েছে।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ‘ইসরায়েলের এই আচরণ সংশ্লিষ্ট আন্তর্জাতিক আইন ও চুক্তির পরিপন্থী।’

মন্ত্রণালয় উল্লেখ করে যে, এই বিলটি ইউএনআরডব্লিউএর প্রতীকী মর্যাদাকে লক্ষ্যবস্তু করেছে। এই সংস্থাটি ফিলিস্তিনি শরণার্থীদের নিজ বাসভূমে ফেরার অধিকার এবং আন্তর্জাতিক আইনের অধীনে ক্ষতিপূরণ পাওয়ার বিষয়টিকে নিশ্চিত করে। ১৯৪৮ সালে বাস্তুচ্যুত হওয়া শরণার্থীদের নিজ বাড়িতে ফেরার অধিকারের বিষয়টি জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের ১৯৪ নম্বর অনুচ্ছেদে উল্লেখ রয়েছে।

জর্ডানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে তাদের আইনি ও নৈতিক দায়িত্ব পালনের আহ্বান জানিয়েছে। একই সঙ্গে ইসরায়েলের ওপর চাপ সৃষ্টি এবং ইউএনআরডব্লিউএকে লক্ষ্যবস্তু করে নেওয়া সিদ্ধান্ত ও আচরণের মোকাবিলায় অবিলম্বে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানানো হয়েছে।

উল্লেখ্য, ৭০ বছরেরও বেশি সময় আগে ফিলিস্তিনি ভূখণ্ড থেকে জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত মানুষের সহায়তার জন্য জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদ ইউএনআরডব্লিউএ প্রতিষ্ঠা করে। ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবরের হামলার সঙ্গে সংস্থাটির কর্মীদের জড়িত থাকার অভিযোগ তুলে ইসরায়েল তাদের ভূখণ্ডে সংস্থাটির কার্যক্রম নিষিদ্ধ করার পর থেকে এটি চরম আর্থিক সংকটের মুখে পড়েছে। এ বছরের শুরুতে ইউএনআরডব্লিউএর কর্মীদের তাদের কম্পাউন্ড বা কার্যালয় খালি করতে বাধ্য করা হয়েছিল।