পাঁচ দশকের সবচেয়ে ভয়াবহ ঘূর্ণিঝড়ে কাঁপছে যুক্তরাষ্ট্র

বিগত পাঁচ দশকের মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ ঘূর্ণিঝড়ে কাঁপছে যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডা রাজ্য। আটলান্টিক মহাসাগরের সবচেয়ে শক্তিশালী এই ঘূর্ণিঝড়টির নাম দেয়া হয়েছে ইরমা। যুক্তরাষ্ট্রের স্থানীয় সময় রোববার সকালে ঘূর্ণিঝড়টি আঘাত হেনেছে।

আবহাওয়া অফিস বলছে, ইরমা যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডার দ্বীপ ফ্লোরিডা কিজ-এ আঘাত হেনেছে। ঘূর্ণিঝড়টির গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় ২১৫ কিলোমিটার। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত, ঘূর্ণিঝড়টি ফ্লোরিডার মূল ভূখণ্ডের দিকে এগুচ্ছে। ভারী বর্ষণে ফ্লোরিডার মিয়ামিতে বন্যা দেখা দিয়েছে। ঘূর্ণিঝড়ের কারণে সৃষ্টি হওয়া জলোচ্ছ্বাসে সাগরের পানি উপচে পড়ছে। বিশেষজ্ঞরা আশঙ্কা করছেন, এই জলোচ্ছ্বাস ও ভূমিধসে রাজ্যটিতে ব্যাপক প্রাণহানি হতে পারে।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এক বার্তায় সকলকে নিরাপদে থেকে ইরমাকে মোকাবিলা করার আহ্বান জানিয়েছেন। যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল হারিকেন সেন্টারও তাদের পুর্বাভাসে ভয়ংকর জলোচ্ছ্বাসের ইঙ্গিত দিয়েছে। বলা হচ্ছে, যুক্তরাষ্ট্রে ৫৭ বছরের ইতিহাসে আঘাত হানা ঘূর্ণিঝড়গুলোর মধ্যে সবচেয়ে শক্তিশালী ইরমা।

জানা গেছে, ইরমা ৪ নম্বর ক্যাটাগরিতে অবস্থান করছে। উপকূলবর্তী বিভিন্ন স্থানে ১৫ ফুট পর্যন্ত পানি ওঠছে। ফ্লোরিডা কিজ দ্বীপে ভূমিধস দেখা দিয়েছে। ফ্লোরিডার প্রায় ১৩ লাখ ৫০ হাজার মানুষ বিদ্যুৎবিহীন অবস্থায় রয়েছে। কাজেই ঝড়ের ভয়াবহতা আরো তীব্র হতে যাচ্ছে বলে ধারনা করছেন আবহাওয়াবিদরা।

ঝড়টি ফ্লোরিডার টাম্পা ও সেন্ট পিটার্সবুগের দিকে অগ্রসর হচ্ছে। ইরমার আঘাতে ফ্লোরিডায় টর্নেডো বয়ে যেতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। এখন পর্যন্ত সেখানে ২৫ জন নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।

বার্তা সংস্থা রয়টার্স বলছে, ইরমার আঘাতে লণ্ডভণ্ড হতে পারে যুক্তরাষ্ট্রের তৃতীয় জনবহুল এই রাজ্যটি। ফ্লোরিডা হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতির অন্যতম ভিত্তি। সেই সঙ্গে রাজ্যটি দেশটির অন্যতম পর্যটন এলাকাও।

আবহাওয়াবিদরা বলছেন, বাতাসের গতিবেগের চেয়ে জলোচ্ছ্বাসে পানিবৃদ্ধিই দুশ্চিন্তার কারণ হতে পারে। ফেডারেল ইমারজেন্সি ম্যানেজমেন্ট অ্যাজেন্সির প্রশাসক ব্রক লং বলেছেন, জলোচ্ছ্বাসের কারণে ব্যাপক প্রাণহানি ঘটতে পারে। ইতোমধ্যে রাজ্যটির মোট জনসংখ্যার ৩০ শতাংশ অর্থাৎ প্রায় ৬৩ লাখ মানুষকে নিরাপদ জায়গায় সরিয়ে নেয়া হয়েছে। তবে অনেকেই আশ্রয়কেন্দ্রে যাচ্ছেন না।