রোহিঙ্গা ইস্যুতে বিশ্ব দরবারেও মিথ্যাচার করল মিয়ানমার
- Details
- by আন্তর্জাতিক ডেস্ক
মিয়ানমারের মুসলিম অধ্যুষিত রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গা জাতিগোষ্ঠির বিরুদ্ধে নিপীড়ন বন্ধে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নিতে ব্যর্থ হওয়ায় দেশটির নেত্রী অং সাং সু চির তীব্র সমালোচনা চলছে সারা বিশ্বে। সমালোচনার কারণেই জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে যোগ দেননি তিনি। তার পক্ষে জাতিসংঘ অধিবেশনে যোগ দেন উপরাষ্ট্রপতি হেনরি ভ্যান থিও। থিও জাতিসংঘে দেয়া ভাষণে রোহিঙ্গা ইস্যুতে পুরো বিশ্বের সামনে চরম মিথ্যাচার করেছেন।
এর আগে গত মঙ্গলবার আন্তর্জাতিক চাপের মুখে রোহিঙ্গা ইস্যুতে জাতির উদ্দেশ্যে ভাষণ দেন অং সান সুচি। মিয়ানমারের রাষ্ট্রীয় উপদেষ্টা অং সান সু চি বলেন, 'বেশ কিছু মুসলিম বাংলাদেশে পালিয়ে গেছে। এমন খবরে আমরা উদ্বিগ্ন। বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া মুসলিমদের সঙ্গে সরাসরি কথা বলতে আগ্রহী আমি।' জাতিসংঘের হিসাবে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গার সংখ্যা ৪ লাখের উপরে। রোহিঙ্গাদের ওপর নির্যাতন, গণহত্যা, ধর্ষণ এবং বাড়িঘর জ্বালিয়ে দেয়ার বিষয়টি অস্বীকার করেন সুচি। একই ধরণের মিথ্যাচার এবার বিশ্ব দরবারে করলেন মিয়ানমার সরকারের উপরাষ্ট্রপতি হেনরি ভ্যান থিও।
আজ বৃহস্পতিবার থিও জাতিসংঘে ভাষণ দেন। ভাষণে রাখাইন রাজ্যের চলমান অবস্থা ও লাখ লাখ রোহিঙ্গার বিষয়ে মিয়ানমারের অবস্থান এক চুলও নড়েনি বলে জানান তিনি। নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে ভাষণে হেনরি ভ্যান থিও তার নেত্রী সু চির ভাষণেরই প্রতিধ্বনি করেন।
সু চির সুরে সুর মিলিয়ে হেনরি ভ্যান থিও বলেন, ‘রাখাইন ছেড়ে রোহিঙ্গা মুসলমানরা কেন বাংলাদেশে পালিয়ে যাচ্ছে এর কারণ মিয়ানমার সরকার খুঁজে বের করতে চায়। আর চলে যাওয়া মুসলমানদের অধিকাংশই নিজেদের গ্রাম নিজেরাই ছেড়ে চলে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন।’
জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে দেয়া ভাষণে থিও আরো বলেন, 'রাখাইন রাজ্যের পরিস্থিতি ক্রমশই উন্নতি হচ্ছে। বিগত ৫ সেপ্টেম্বরের পর থেকে সেখানে কোনো ধরণের সহিংস ঘটনা ঘটেনি।' এদিকে বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার তুমব্রু সীমান্তের ওপারে আজও গুলির শব্দ পাওয়া গেছে। দেখা গেছে, রোহিঙ্গাদের বাড়িঘরে আগুন দেয়ার দৃশ্য।
জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে হেনরি ভ্যান থিও'র সবচেয়ে বড় মিথ্যাচারটি হলো, রাখাইনের মুসলিমদের মধ্যে সংখ্যাগরিষ্ঠ বড় একটি অংশই দেশত্যাগ করেনি। সুচিও বলেছিলেন, মুসলিমদের ৫০ শতাংশ গ্রাম এখনো অক্ষত রয়েছে।
এদিকে মানবাধিকার সংস্থা এমনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল বলেছে, ২৫ তারিখের পর থেকে রাখাইনে কয়েক ডজন গ্রাম পুড়িয়ে দেয়া হয়েছে। চারদিকে এখনো আগুন জ্বলছে। হিউম্যান রাইটস ওয়াচ বলেছে, রাখাইনে কমপক্ষে ৬২টি রোহিঙ্গা গ্রাম পুড়ে ছারখার হয়েছে জিঘাংসার আগুনে।
রাখাইনে মোট জনসংখ্যা প্রায় ৩১ লাখ। এরমধ্যে রোহিঙ্গা মুসলমান ১০ লাখের উপরে। ২০১৬ সালে চলা সহিংসতায় প্রায় এক লাখ ২৫ হাজার রোহিঙ্গা বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়। স্বাধীনতার পর বিভিন্ন সময় লক্ষাধিক রোহিঙ্গা শরণার্থী কক্সবাজারে আশ্রয় নেয়। জাতিসংঘ বলছে, গত এক মাসে কমপক্ষে ৪ লাখ ২০ হাজার রোহিঙ্গা বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে। রোহিঙ্গাদের মুখে শোনা যাচ্ছে, মিয়ানমার সেনাবাহিনীর বর্বর নির্যাতনের নির্মম গল্প। অথচ সু চি প্রশাসন দেশে-বিদেশে মিথ্যা বলে বেড়াচ্ছে।
গুগল নিউজে আমাদের প্রকাশিত খবর পেতে এখানে ক্লিক করুন...
খেলাধুলা, তথ্য-প্রযুক্তি, লাইফস্টাইল, দেশ-বিদেশের রাজনৈতিক বিশ্লেষণ সহ সর্বশেষ খবর
Stay up-to-date with the latest news from Bangladesh. Our comprehensive coverage includes politics, business, sports, and culture. Get breaking news, analysis, and commentary on the issues that matter most to Bangladeshis and the international community.
Bangladesh is a country located in South Asia and is home to a diverse population of over 160 million people. It has a rich cultural heritage and a rapidly growing economy. News from Bangladesh covers a wide range of topics, including politics, economics, social issues, culture, and more. The country has made significant progress in recent years in areas such as poverty reduction, education, and healthcare. However, it still faces challenges such as corruption and environmental degradation. Bangladeshi news sources cover both local and international news to keep the public informed about the latest developments and events.