তুরস্ক: মার্কিন সেনারাও হামলা থেকে রেহাই পাবে না

সিরিয়ার আফরিনে চলমান সামরিক অভিযানে বাধা দিলে অথবা কুর্দি গেরিলাদের পক্ষে লড়াই করতে আসলে মার্কিন সেনারা হামলা থেকে রেহাই পাবে না বলে কড়া হুমকি দিয়েছে তুরস্ক। এর ফলে ন্যাটোভুক্ত দেশ দুটির মধ্যে ক্রমশ শীতল হতে থাকা সম্পর্ক এখন যে কোন সময় সামরিক সংঘাতে রূপ নিতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

রোববার সিএনএন টেলিভিশনের তুর্ক বিভাগকে তুর্কি উপ-প্রধানমন্ত্রী বাকির বোজদাগ বলেন, কুর্দি পিপল’স প্রোটেকশন ইউনিট বা ওয়াইপিজি হচ্ছে একটি সন্ত্রাসী সংগঠন। তারা তুরস্কের জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। তাই তাদের দমনে অভিযান চালাচ্ছে তুর্কি সেনাবাহিনী।

বাকির বোজদাগ সতর্ক করে বলেন, মার্কিন সেনারা যদি এই কুর্দি সন্ত্রাসী গোষ্ঠীকে সাহায্য করে অথবা তাদের পোষাক পরে যুদ্ধের ময়দানে নামে তারাও হামলা থেকে রেহাই পাবে না। যুদ্ধক্ষেত্রে এমনটা ঘটলে মার্কিন সেনাদেরকে সন্ত্রাসী বলেই বিবেচনা করা হবে।

তিনি আরও বলেন, আমরা মনে করি, তুরস্কের সংবেদনশীলতা সম্পর্কে মার্কিন প্রশাসন যথেষ্ট সচেতন রয়েছে। মার্কিন সেনাদের সঙ্গে তুরস্ক কোথাও সংঘাত চায় না। কিন্তু কুর্দি পোষাক পরে তুর্কি সেনাদের ওপর মার্কিন সেনারা হামলা চালালে ফল ভালো হবে না। সন্ত্রাসীদের সঙ্গে যে আচরণ করা হচ্ছে, তাদের সঙ্গেও একই কাজ করা হবে। মার্কিন সেনাদের আলাদা করার কোন সুযোগ থাকবে না।

সিরিয়ার আফরিনে ‘অলিভ ব্রাঞ্চ’ নামে কুর্দি সন্ত্রাসবিরোধী অভিযান চালাচ্ছে তুরস্ক। এই অভিযানের মধ্যেই শনিবার কুর্দি গেরিলাদের হামলায় তুরস্কের সাত সেনা নিহত হয়।

দেশটির গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের সরবরাহ করা ট্যাংক বিধ্বংসী অস্ত্র দিয়েই তুর্কি ট্যাংকে হামলা চালায় কুর্দি গেরিলারা। এতে ওই ট্যাংকটি ধ্বংস এবং সাত সেনা নিহত হয়।

আনাদলু এজেন্সি জানিয়েছে, আফরিনে চলমান অভিযানে শনিবার পর্যন্ত ৮৯৯ সন্ত্রাসী নিহত হয়েছে বলে জানিয়েছে তুর্কি সামরিক বাহিনী। এর বিপরীতে কুর্দি সন্ত্রাসীদের হামলায় ১৩ জন তুর্কি সেনা নিহত এবং ৫৭ জন আহত হয়েছে।

রয়টার্স জানায়, ‘অলিভ ব্রাঞ্চ’ অভিযানে কুর্দি গেরিলাদের হামলায় একটি তুর্কি ট্যাংক ধ্বংস করেছে। এ সময় ৫ সেনা নিহত হয়েছে। আরো দুটি পৃথক হামলায় দুইজন সেনা নিহত হয়েছেন। অভিযান শুরুর পর এটিই হচ্ছে তুর্কি সেনাদের সর্বোচ্চ ক্ষয়ক্ষতির ঘটনা।

গত ২০ জানুয়ারি তুরস্ক-সিরিয়ার সীমান্তবর্তী আফরিনকে মুক্ত করতে কুর্দি বিরোধী ‘অপারেশন অলিভ ব্রাঞ্চ’ শুরু হয়।

তুর্কি সেনাবাহিনী বলছে, সর্বোচ্চ সতর্কতার সাথে এ অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে। যাতে বেসামরিক মানুষের ক্ষয়ক্ষতি এড়িয়ে কেমল সন্ত্রাসীদের নির্মূল করা যায়।