এবার কিমের দেশে 'মি টু' ঝড়

হলিউড, বলিউডসহ বিশ্ব রাজনৈতিক অঙ্গনও এখন 'মি টু' ঝড়ে কাঁপছে। এই ধারা থেকে বাদ পড়েনি কঠোর নিয়ম-শৃঙ্খলার দেশ উত্তর কোরিয়াও। নির্যাতনের মুখে উত্তর কোরিয়া থেকে পালিয়ে যাওয়া নারীরা মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচের (এইচআরডাব্লিউ) কাছে দেশটির বড় কর্তাদের বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানির অভিযোগ তুলেছেন।

বিবিসির খবরে বলা হচ্ছে, মানবাধিকার সংস্থাটি উত্তর কোরিয়া থেকে পালিয়ে অন্য দেশে আশ্রয় নেয়া ৬২ জন নারীর সঙ্গে কথা বলে জানতে পেরেছে, দেশটিতে নারীদের যৌন হয়রানি এত খারাপ পর্যায়ে পৌঁছেছে যে, এই ঘটনাকে ওখানে নিত্যদিনের ‘স্বাভাবিক’ কর্মকাণ্ড বলে ধরা হয়।

তেমনি এক নির্যাতিতা ওহ জং হী, যিনি একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের কর্মচারী ছিলেন। ৪০ বছর বয়সী এই নারী বলেন, ‘কোনো ভুল করলে তার বস কক্ষে নিয়ে সঙ্গমে বাধ্য করতো। অনেক সময় রাতভর কাঁদতাম, ভাবতাম এখান থেকে মুক্তি কীসে?’

এইচআরডাব্লিউ বলছে, অপর্যাপ্ত যৌন শিক্ষা এবং অপরাধীদের শাস্তির আওতায় না আনায় দিন দিন দেশটিতে যৌন হয়রানি বেড়েই চলছে।

খবরে বলা হচ্ছে, উত্তর কোরীয় সরকারের শীর্ষ কর্মকর্তা, ক্ষমতাসীন কমিউনিস্ট পার্টির নেতা এবং কারারক্ষীরা নারীদের হয়রানির সঙ্গে বেশি জড়িত। যার ফলে তারা ধরাছোঁয়ার বাইরে থাকছে।

নির্যাতিত নারীরা সবাই বলেছেন, সরকারি কর্মকর্তা বা দলের নেতারা বেছে বেছে অল্প বয়সী মেয়েদের ধরে নিয়ে সঙ্গমে বাধ্য করে। কেউ যদি তাদের কথায় রাজি না হয়, তাহলে নেমে আসে নির্যাতন।

পার্ক ইয়াং হি নামের এক নারীকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পুলিশ বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে যায়। তিনি এইচআরডাব্লিউকে বলেন, ‘অফিসার আমাকে তার খুব কাছে বসালো এরপর... আমার শরীরের বিভিন্ন অঙ্গে স্পর্শ করে।’

‘সেই ব্যক্তিই আমার জীবনের প্রথম... তারপর আর কী করার...’ বলে কেঁদে ফেলেন পার্ক।

জাতিসংঘ ২০১৪ সালে উত্তর কোরিয়ার নারী নিগ্রহ নিয়ে প্রতিবেদন করেছিল। সম্প্রতি সেই প্রতিবেদন বিস্তরভাবে প্রকাশ করে সংস্থাটি। বলেছে ‘সেখানে নারীদের যৌন নিগ্রহ বৈধপন্থায় ব্যাপক হারে বেড়েছে’।

মানবাধিকার সংস্থা এইচআরডাব্লিউ বলছে, উত্তর কোরিয়ার নেতা যেহেতু বহির্বিশ্বের সঙ্গে চলার পদক্ষেপ নিয়েছে। এজন্য তার উচিত দেশের ভেতরে নারীদের হয়রানি ও মানবাধিকারের বিষয়ে গুরুত্ব দেয়া। আর যৌন হয়রানিকে অপরাধ গন্য করে শাস্তির ব্যবস্থা নেয়া।