সুষ্ঠু বিচার করতে না পেরে বিচারকের আত্মহত্যার চেষ্টা

ন্যায়বিচার করতে না পেরে থাইল্যান্ডের এক বিচারক নিজের বুকে গুলি করে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছেন। থাইল্যান্ডের মুসলমান অধ্যুষিত ইয়ালা প্রদেশের রাজধানী ইয়ালায় গত শুক্রবার ৪ অক্টোবর এ ঘটনাটি ঘটে।

এক হত্যা মামলার পাঁচ মুসলিম আসামিকে বেকসুর খালাসের রায় ঘোষণার পর আত্মহত্যার চেষ্টা করেন বিচারপতি খানাকর্ন পিয়ানচানা। ওই ৫ ব্যাক্তির বিরুদ্ধে হত্যা, অপরাধ কর্মকাণ্ড এবং অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্র রাখার অভিযোগ ছিল।

রায় ঘোষণার পর বিচারপতি পিয়ানচানা আদালতের ভেতরেই সামাজিক মাধ্যম ফেইসবুক লাইভে একটি আবেগপূর্ণ বক্তব্যে দেশটির বিচার ব্যবস্থার ত্রুটি নিয়ে কথা বলার পর শপথবাক্য পাঠ করেন এবং পিস্তল বের করে নিজের বুকে গুলি করেন।

পিয়ানচানার ভাষ্যমতে, ওই ৫ জনকে দোষী সাব্যস্ত করার জন্য উপর মহল থেকে চাপ আসছিলো, কিন্তু তাদের বিরুদ্ধে কোনোপ্রকার প্রমাণ না থাকায় তিনি ঐ ৫ জন মুসলমান ব্যাক্তিদের খালাস দিয়ে দেন।

তিনি বলেন, 'কাউকে শাস্তি দিতে আমাদের স্পষ্ট এবং যথাযথ প্রমাণের প্রয়োজন। আপনি যদি নিশ্চিত না হন তবে তাদের শাস্তি দেবেন না। আমি বলছি না যে, ওই পাঁচ বিবাদী অপরাধ করেননি, হয়ত তারাই ওই অপরাধ করেছেন। কিন্তু বিচার প্রক্রিয়া স্বচ্ছ ও বিশ্বাসযোগ্য হওয়া প্রয়োজন। ভুল মানুষকে শাস্তি দেওয়ার অর্থ তাদের বলির পাঁঠা বানানো।'

তাকে দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় এবং শনিবার শেষ খবর পর্যন্ত তিনি আশঙ্কামুক্ত আছেন বলে রয়টার্সকে জানিয়েছেন কোর্ট অব জাস্টিসের মুখপাত্র সুরিয়া হংউইলাই, 'তিনি এখন বিপদমুক্ত। তার এমন কাজ করার কারণ আমরা এখনও জানতে পারিনি। হয়তো ব্যক্তিগত কোনো কারণে তিনি মানসিক চাপে ছিলেন। আমি নিশ্চিত করে বলতে পারি, বিচারক হিসেবে তার কাজে কোনো হস্তক্ষেপ করা হয়নি। তারা স্বাধীনভাবে নিজেদের রায় দেন।'

১৯০৯ সালে থাইল্যান্ডের অন্তর্ভুক্তির আগে ইয়ালা, পাত্তানি এবং নারাথিওয়াত মালয় মুসলিম অধ্যুষিত এলাকা ছিলো। সেখানে এখনও কিছু বিচ্ছিন্নতাবাদীরা স্বাধীনতার রাষ্ট্রের দাবিতে সোচ্চার।