ঘামাচির প্রকারভেদ ও প্রতিকার

গরম আসলেই ত্বকে নানা রকম সমস্যা দেখা দেয়। শরীর ঘেমে এর সাথে ময়লা জমে ঘামাচি, রেশ, অ্যালার্জি হয়। ঘর্মগ্রন্থির রোগ ঘামাচিকে চিকিৎসা বিজ্ঞানে বলা হয় মিলিয়ারিয়া। সাধারণত শরীরে মিলিয়ারিয়া কৃস্টালিনা, মিলিয়ারিয়া প্রফান্ডা ও মিলিয়ারিয়া রুবরার এই তিন ধরনের ঘামাচি দেখা যায়।

মিলিয়ারিয়া কৃস্টালিনা ও মিলিয়ারিয়া প্রফান্ডা জাতীয় ঘামাচি প্রায় স্বাভাবিক হয়। এটির তেমন কোনো উপসর্গ থাকে না। তবে মিলিয়ারিয়া প্রফান্ডা ঘামাচির মূল ত্বকের অনেক গভীরে থাকে।

মিলিয়ারিয়া রুবরার আক্রমণ অনেকটাই তীব্র। গরম ও স্যাঁতসেঁতে আবহাওয়ায় এ রোগ বেশি হয়। মিলিয়ারিয়া রুবরার ক্ষেত্রে ঘর্মনালীতে বদ্ধতা দেখা দেয় এবং ত্বকের ওপরে ছোট ছোট অসংখ্য গোটা হতে দেখা যায়। কোন কোন ক্ষেত্রে গোটার মাথায় পানির দানাও থাকে। ত্বক স্বাভাবিকের চেয়ে লালচে রঙের দেখা যায় এবং প্রচণ্ড চুলকানি থাকে। এটি বুক, পিঠ ও ঘাড়ে বেশি হয়। তেল মাখলে এটি বেড়ে যেতে পারে।

ঘামাচি থেকে রেহাই পেতে

ঘামাচি আক্রান্ত স্থানে চন্দন বাটা ও গোলাপজল মেশানো পেস্ট ব্যবহার করুন। কিছুদিন নিয়মিত ব্যবহারে ঘামাচির উপদ্রব কমে যাবে।

পরিমানমতো খাবার সোডা ও গোলাপজল মিশ্রিত পেস্ট ঘামাচি আক্রান্ত স্থানে মেখে রাখুন ঘণ্টা খানিক। তারপর গোসল সেরে নিন। এই পদ্ধতি অনুসরণে ঘামাচি কমে যাবে। আটা ও পানি মিশ্রিত পেস্টও বেশ উপকারি ঘামাচির জন্য।

তেজপাতা সারারাত গোলাপ জলে ভিজিয়ে রেখে সেই পানি আক্রান্ত স্থানে লাগালে ঘামাচির প্রবণতা কমে যায়। আবার গোসলের আগে আগে ফিটকিরি মেশানো পানি গায়ে লাগিয়ে কিছুক্ষণ পর গোসল করে নিন। উপকৃত হবেন। আর গোসলের পর ঘামাচি আক্রান্ত স্থান ঘষে ঘষে মুছবেন না। কারন এমনটা করলে ঘামাচির যন্ত্রণা যেমন বাড়বে, তেমনি ঘামাচিও বাড়বে।

লাউ পানি জাতীয় সবজি। ঘামাচি প্রতিরোধে এটি বেশ উপকারী সবজি। আগুনে লাউ ঝলসে রস বের করে নিন। কিছুদিন নিয়মিত লাউয়ের রস খেলে ঘামাচি কমে যাবে।

অনেকের মুখেও ঘামাচি দেখা যায়। এই সমস্যা হলে বানিয়ে নিন একটা প্যাক। আতপ চাল, তুলসি পাতা ও কয়েক টুকরা কচি লাউ এক সাথে পাটায় পিষে তৈরি করে নিন পেষ্ট। কিছুদিন নিয়মিত মুখে লাগিয়ে ১০/১৫ মিনিট পর ঠাণ্ডা পানিতে ধুয়ে নিন। ঘামাচি চলে যাবে।

অ্যালোভেরা বা ঘৃতকুমারীর জেল শরীরকে ঠাণ্ডা রাখতে সাহায্য করে থাকে। তাই ঘামাচি আক্রান্ত স্থানে এই জেল ব্যবহার করতে পারেন।

আপনি যদি ঘামাচিতে আক্রান্ত হন আর আপনার যদি গায়ে তেল মাখার অভ্যাস থাকে তাহলে ঘামাচি থাকাকালীন তেল এড়িয়ে চলুন। কারন তেল ঘামাচি বাড়তে সাহায্য করে।

আপনি আরও পড়তে পারেন

গরমেও হবে আরামের ঘুম

হার্ট অ্যাটাক হলে কী করবেন, কী করবেন না

কিডনিতে পাথর: ভয় না পেয়ে দেখুন কী করবেন