বঙ্গোপসাগরে ৪ দেশের নৌ-মহড়া, ক্ষুব্ধ চীন

বঙ্গোপসাগরের মালাবার উপকূলে যুক্তরাষ্ট্র, জাপান, অস্ট্রেলিয়া ও ভারতের যৌথ নৌ-মহড়া শুরু হয়েছে আজ মঙ্গলবার, চলবে শুক্রবার পর্যন্ত। এশিয়া প্যাসিফিক অঞ্চলে এমন তৎপরতার বিরোধিতা করে চীন ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া দেখিছে।

বঙ্গোপসাগরে চার দেশের নৌ-মহড়া

ভারতীয় সামরিক সূত্র জানায়, দুই ভাগের এ মহড়ার প্রথম পর্ব বঙ্গোপসাগরে অনুষ্ঠিত হচ্ছে, নভেম্বরের মাঝামাঝি আরব সাগরে হবে দ্বিতীয় পর্ব। এতে অংশ নিয়েছে ভারতীয় নৌবাহিনী, ইউএস নেভি, জাপান মেরিটাইম সেল্ফ ডিফেন্স ফোর্স ও অস্ট্রেলিয়ান রয়্যাল নেভির যুদ্ধ জাহাজ।

এ মহড়ায় চার দেশের গাইডেড মিসাইল ডেস্ট্রয়্যার, লং রেঞ্জ ফ্রিগেটস, এমএইচ ৬০ হেলিকপ্টার, ইন্টিগ্রাল এসএইচ ৬০ হেলিকপ্টার অংশ নিয়েছে। এছাড়া সাবমেরিন, এয়ার কেরিয়ার জাহাজসহ বিভিন্ন ধরনের আধুনিক যুদ্ধজাহাজ রয়েছে মহড়ায়।

ডয়চে ভেলের খবরে বলা হয়, চীনকে টক্কর দিতে চালানো এ মহড়ায় চারটি দেশের নৌসেনারা অংশগ্রহণ নিয়েছে। কয়েক সপ্তাহ আগে জাপানে বসে সংশ্লিষ্ট দেশগুলোর কর্মকর্তারা এ আয়োজনের পরিকল্পনা করেন।

ওই বৈঠকে এশিয়া প্যাসিফিক অঞ্চলে চীনের ক্রমবর্ধমান শক্তি মোকাবেলায় নানামুখী কূটনৈতিক পদক্ষেপের বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়। তখনই এমন বৈঠকের তীব্র বিরোধিতা করেছিল চীন। এ ঘটনাকে আন্তর্জাতিক কূটনীতির শিষ্টাচার লঙ্ঘন হিসেবে অভিহিত করে বিবৃতি দেয় চীন। কার্যত দেশটির সে হুমকি আমলে না নিয়ে যথারীতি নৌ-মহড়া শুরু করলো চার দেশ।

চীন, ভারত ও যুক্তরাষ্ট্রের পতাকা

পিটিআই ও এএনআই জানিয়েছে, ভারত ও যুক্তরাষ্ট্র এ অঞ্চলে দীর্ঘদিন ধরে যৌথ নৌ মহড়া চালিয়ে আসলেও ১৩ বছর পর তাদের সঙ্গে যোগ দিলো অস্ট্রেলিয়া। এর সঙ্গে নতুন করে যুক্ত হলো জাপানও। চীনা চাপেই অস্ট্রেলিয়া ও জাপান এতদিন এ ধরনের তৎপরতা থেকে বিরত ছিল বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা।

ভারতের সাবেক লেফটন্যান্ট জেনারেল উৎপল ভট্টাচার্য জানান, রুটিন মহড়া হলেও জাপান ও অস্ট্রেলিয়া অংশ নেয়ায় গুরুত্ব বেড়েছে অপরিসীম। চীনা পিপলস আর্মি নেভির ক্ষমতা ব্যপক হওয়ায় দক্ষিণ চীন সাগরে দেশটি একাধিপত্য প্রতিষ্ঠা করতে চায়। এর বিপরীতে একজোট হয়ে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়েছে চার দেশ।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, চীনবিরোধী চার দেশের এ তৎপরতায় দক্ষিণ এশিয়া তো বটেই আন্তর্জাতিক অঙ্গনেও শক্তির ভারসাম্য নষ্ট হতে পারে। কেননা, কয়েকদিন আগে টু প্লাস টু বৈঠকে চীনের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ শক্তি গড়ে তোলার কথা জানায় ভারত ও যুক্তরাষ্ট্র। এর পরেই অনুষ্ঠিত এ মহড়া কড়া বার্তা দেবে বিশ্ববাসীর কাছে।