আপনি পড়ছেন

ইসলামের পাঁচটি স্তম্ভের মধ্যে যাকাত অন্যতম। সাধারণত কোন মুসলমানের স্বীয় আয় ও সম্পত্তির একটি নির্দিষ্ট অংশ যদি ইসলামী শরিয়ত নির্ধারিত সীমা অতিক্রম করে তাহলে তার জন্য এই যাকাত আদায়কে ফরজ করা হয়েছে। যা সমাজের গরীব-দুঃস্থদের মধ্যে বিতরণ করতে হয়। কিন্তু এখন কথা হচ্ছে, ইসলামের এই ফরজটি আপনি কীভাবে আদায় করছেন বা কাকেই দিচ্ছেন এই যাকাত?

zakat tex pic

সমাজের কোন ব্যক্তি যাকাত নেয়ার যোগ্য কিংবা কোন খাতে যাকাত আদায় করলে আপার যাকাত ঠিক মতো আদায় হবে তার একটি নির্দেশনা দিয়েছে ইসলাম। এর বাইরে যাকাত আদায় করলে শুধু শুধু আপনার অর্থই ব্যয় হবে কিন্তু যাকাত আদায় হবে না। তাহলে আসুন, এবার জেনে নেই কার উপর যাকাত ফরজ এবং যাকাত কোথায় আদায় করবেন তার বিস্তারিত।

যাকাত ফরয যাদের উপর:

যাকাত আদায়ের ক্ষেত্রে অবশ্যই একজন মুসলমানকে প্রাপ্ত বয়স্ক ও বিবেক-বুদ্ধি সম্পন্ন হতে হবে। তবে ইসলামের বিধি মোতাবেক যাকাত ফরজ হওয়ার জন্য নিসাব পরিমাণ মাল অর্থাৎ সাড়ে সাত ভরি স্বর্ণ অথবা সাড়ে বায়ান্ন ভরি রূপা অথবা তার সমপরিমাণ মূল্য বা টাকা তার বৎসরের সকল মৌলিক প্রয়োজনের পর অতিরিক্ত থাকলেই যাকাত প্রদান করতে হবে তাকে। এছাড়াও যদি এককভাবে কোন পণ্য বা দ্রব্যের মূল্য নিসাব পরিমাণ না হয় কিন্তু ব্যক্তির সবগুলো সম্পদের মূল্য মিলিয়ে একত্রে সাড়ে ৫২ তোলা রৌপ্য মূল্যের সমান হয় তবে ওই ব্যক্তির নিসাব পূর্ণ হবে। ফলে তাকেও যাকাত আদায় করতে হবে।

পাশাপাশি প্রয়োজনে নেয়া ঋণ পরিশোধের পর নিসাব পরিমাণ সম্পদ থাকলে যাকাত দেয়ার নির্দেশ নিয়েছে ইসলাম। এর বাইরেও যদি স্বামী-স্ত্রীর সস্পদ একই পরিবারের গণ্য হয় কিন্তু মালিকানা ভিন্ন থাকে তাহলে আলাদা আলাদাভাবে নিজ নিজ সম্পদের যাকাত আদায় করতে হবে।

কোথায় দিবেন যাকাত:

কোথায় এবং কাকে যাকাত দিবেন তার পূর্ণ বিবরণ দিয়েছে ইসলাম। এ বিষয়ে পবিত্র কোরআনে বিস্তারিত বর্ণনা করা হয়েছে। সুরা তওবার ৬০ নং আয়াতে আল্লাহ বলেন, “যাকাত কেবল ফকির, মিসকিন ও যাকাত আদায়কারী কর্মচারীদের জন্য, যাদের চিত্ত আকর্ষণ করা প্রয়োজন তাদের জন্য অর্থাৎ নও মুসলিম, দাস মুক্তির জন্য, ঋণে জর্জরিত ব্যক্তিদের ঋণমুক্তির জন্য, আল্লাহ পাকের রাস্তায় জিহাদকারী এবং মুসাফিরদের জন্য।

তাই উপরের আয়াতের ব্যাখ্যা এবং রাসুলের হাদিস অনুযায়ী নিম্নোক্ত ব্যক্তিকে জাকাত প্রদান করতে হবে। এই যেমন ফকির, যার নিকট খুবই সামান্য সহায় সম্বল আছে। কোন মিসকীন ব্যক্তি। যার আয়ের চেয়ে ব্যয় বেশি এবং আত্মসম্মানের খাতিরে কারো কাছে হাত পাততে পারে না। পাশাপাশি যাকাত আদায় ও বিতরণের কর্মচারী।

এছাড়াও একজন নওমুসলিমকেও যাকাত দেয়া করা যাবে। যে অন্য ধর্ম ছেড়ে ইসলাম ধর্ম গ্রহণের কারণে পারিবারিক, সামাজিক ও আর্থিকভাবে বঞ্চিত হয়েছে। ঋণমুক্তির জন্য কোনো ব্যক্তিকে যাকাত প্রদান করা যাবে। অর্থাৎ যে ব্যক্তি প্রয়োজনীয় চাহিদা পূরণের জন্য সঙ্গতকারণে ঋণগ্রস্ত হয়ে পড়েছে।

কৃতদাসের মুক্তির জন্যও যাকাত প্রদান করা যাবে। আল্লাহর রাস্তায় জিহাদ অর্থাৎ বিধর্মীদের সঙ্গে লড়াইয়ে ইসলামকে বিজয়ী করার লক্ষ্যেও মুজাহিদদের যাকাত দেয়া যাবে। মুসাফির অবস্থায় কোন ব্যক্তি বিশেষ কারণে অভাবগ্রস্থ হলে ওই ব্যক্তির বাড়িতে যতই ধন-সম্পদ থাকুক না ইসলামের বিধান মতে তাকেও যাকাত প্রদান করা যাবে।

আপনি আরো পড়তে পারেন 

লাইলাতুল বরাতে করণীয়-বর্জনীয়

লাইলাতুল বরাতের গুরুত্ব

কুরবানি: ফরজ, ওয়াজিব নাকি সুন্নাত?

আল্লাহর নিকট গোশত নয়, পৌছায় বান্দার তাকওয়া

কুরবানি আল্লাহর প্রতি ইবাদত

গুগল নিউজে আমাদের প্রকাশিত খবর পেতে এখানে ক্লিক করুন...

খেলাধুলা, তথ্য-প্রযুক্তি, লাইফস্টাইল, দেশ-বিদেশের রাজনৈতিক বিশ্লেষণ সহ সর্বশেষ খবর