পাঁচ কারণে করোনাভাইরাস পরিস্থিতি নিয়ে আশাবাদ
- Details
- by জীবনশৈলী ডেস্ক
করোনাভাইরাস পরিস্থিতির কারণে গত কয়েকটি মাস ছিলো দুঃস্বপ্নের মতো। এই সময়ে হাজার হাজার লোক মারা গেছেন, লাখ লাখ লোক সংক্রমিত হয়েছেন এবং লকডাউনে নানা রকম ক্ষতি হয়েছে, মানসিক স্বাস্থ্য খারাপ হয়েছে। কিন্তু সেই পরিস্থিতি এখন কিছুটা হলেও ভালো হয়েছে।
এ রকম পাঁচটি বিষয় এখন সামনে এসেছে, যে সব কারণে করোনাভাইরাস পরিস্থিতি নিয়ে কিছুটা হলেও আশাবাদী হওয়া যাচ্ছে।
কঠিনতম সময় পেরিয়ে এসেছে পৃথিবী
আপাতত কমে এসেছে সংক্রমণের পরিমাণ। জানুয়ারি থেকে এখন পর্যন্ত পৃথিবীজুড়ে যতো মানুষ সংক্রমিত হয়েছে, তা নভেম্বর-ডিসেম্বরের তুলনায় বেশ কম। করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তির পরিমাণও কমে এসেছে।
করোনাভাইরাসে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোও ধীরে ধীরে সব কিছু খুলে দিচ্ছে। সে সব দেশেও নতুন করে সংক্রমিত হওয়াদের সংখ্যা কমে এসেছে। সুতরাং এটি ধারণা করাই যায় যে করোনাভাইরাসের কারণে সৃষ্ট পরিস্থিতি অনেকটাই ভালো হয়ে এসেছে।
বিশ্বজুড়ে চলছে ভ্যাকসিনেশন
বাংলাদেশে সাত ফেব্রুয়ারি থেকে গণহারে ভ্যাকসিন প্রদান প্রক্রিয়া শুরু হওয়ার কথা। বিশ্বের অনেক দেশে এর মধ্যেই এ প্রক্রিয়া শুরু হয়ে গেছে। যুক্তরাজ্য এর মধ্যেই অন্তত ১০ মিলিয়ন লোককে ভ্যাকসিন দিয়ে ফেলেছে। মোট জনসংখ্যার হিসেবে মাথাপ্রতি সবচেয়ে বেশি ভ্যাকসিন দিয়েছে তারাই।
এই উদ্যোগের ফলে বহু লোক এর মধ্যেই করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি থেকে অনেকটাই মুক্ত হয় গেছেন, নিঃসন্দেহে করোনাভাইরাস পরিস্থিতি এতে বেশ স্বাভাবিক হয়ে আসছে।
ভ্যাকসিনেশনের ফলে কমছে সংক্রমণ
ভ্যাকসিন গ্রহণ করা ব্যক্তিরা এমনিতেই করোনভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি থেকে অনেকটা নিরাপদ। এ ছাড়া ভ্যাকসিন নেওয়ার ফলে ব্যক্তি-থেকে-ব্যক্তিতে ভাইরাসের সংক্রমণ কমে এসেছে।
অক্সফোর্ডের ভ্যাকসিন গ্রহণ করা কিছু ব্যক্তিকে টানা বেশ কয়েকবার পরীক্ষা করা হয়েছে। এই পরীক্ষার ফলে দেখা গেছে যে কোনো রকম সংক্রমণের হার অন্তত ৬৭ শতাংশ পর্যন্ত কমে এসেছে— যা করোনাভাইরাস পরিস্থিতি নাটকীয় পরিবর্তনের আভাস।
আক্রান্ত হয়ে সুস্থ হওয়াদের জন্য সুখবর
পৃথিবীজুড়ে বহু মানুষ এর মধ্যেই করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে সুস্থ হয়ে গেছেন। একটি গবেষণায় দেখা গেছে, যারা করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে সুস্থ হয়েছেন, তাদের নতুন করে আক্রান্ত হওয়ার ঘটনা খুবই কম। অন্তত ছয় মাসের মধ্যে তাদের নতুন করে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি নেই বললেই চলে। এমন কি ছয় মাস পরে যে তারা আক্রান্ত হতে পারেন, সেই ঝুঁকিও কম।
গবেষণাটির প্রধান নাওমি অ্যালেন বলেন এটা আসলেই একটি সুখবর। আক্রান্ত হওয়ার পর প্রাকৃতিক রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতায় কিছু নতুন বিষয় যোগ হয়, যা পুনরায় আক্রান্ত হওয়া থেকে সুরক্ষা দিতে সক্ষম।
ভাইরাসের বংশবৃদ্ধিকেও হারানো সম্ভব
করোনাভাইরাসের বংশবৃদ্ধি এবং বিভিন্ন নতুন ধরন নিয়ে বেশ আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছিলো। কিন্তু গত কয়েক সপ্তাহের গবেষণায় জানা যাচ্ছে, এখন পর্যন্ত করোনাভাইরাসের যে কটি ভ্যাকসিন অনুমোদন পেয়েছে, তার বেশির ভাগই করোনাভাইরাসের নতুন ধরন থেকে সুরক্ষা দিতে সক্ষম এবং এগুলোর বংশবৃদ্ধি ঠেকাতে উপযুক্ত।
যুক্তরাষ্ট্রে চিহ্নিত হওয়া একটি ধরন নিয়ে গবেষকদের মধ্যে দুশ্চিন্তা ছিলো এবং দক্ষিণ আফ্রিকার ধরনটি নিয়েও তাদের কপালে ঘাম জমে গিয়েছিলো। কিন্তু গবেষণায় দেখা যাচ্ছে, এগুলোর বংশবৃদ্ধি ঠেকানো কঠিন কিছু নয়।
সব মিলিয়ে করোনাভাইরাস পরিস্থিতি এখন অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে আছে। বিশ্বজুড়ে ভ্যাকসিনের সরবারহ ও প্রয়োগ যতো বাড়তে থাকবে, করোনাভাইরাস থেকে মানুষের নিরাপদ থাকার সম্ভাবনাও ততোই বেড়ে যাবে— আপাতত এটিই গবেষকদের আশাবাদ।
খেলাধুলা, তথ্য-প্রযুক্তি, লাইফস্টাইল, দেশ-বিদেশের রাজনৈতিক বিশ্লেষণ সহ সর্বশেষ খবর