বিক্ষোভে কারেন, রাখাইন ও কাচিন সদস্যরাও

মিয়ানমারে সেনা অভ্যুত্থানের বিরুদ্ধে বেশ কয়েক দিন ধরে চলছে প্রতিবাদ ও বিক্ষোভ। দীর্ঘ সময় সামরিক জান্তার অধীনে থাকা দেশটির জনগণ নতুন করে আর সেনা শাসন দেখতে চায় না। তবে শুধু দেশটির ‘নিয়মিত জনগণ’ নয়, এবার চলমান অভ্যুত্থান বিরোধী বিক্ষোভে অংশ নিয়েছেন দেশটির বিভিন্ন সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের সদস্যরাও।

মিয়ানমারে বিক্ষোভে কারেন, রাখাইন ও কাচিন সদস্যরাও

বছরের পর বছর ধরে নিজেদের স্বায়ত্তশাসনের দাবিতে আন্দোলন করে আসছে মিয়ানমারের কারেন, রাখাইন ও কাচিন সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠীর সদস্যরা। তবে বার্মিজ আর্মি বরাবরই তাদের দাবিকে নস্যাৎ করতে সংখ্যালঘু এসব সম্প্রদায়ের ওপর দমন-পীড়ন চালিয়ে আসছে।

ভয়েস অফ আমেরিকার এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মিয়ানমারে চলমান সেনা অভ্যুত্থান বিরোধী বিক্ষোভে এবার সেই নির্যাতিত সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের লোকরাও অংশ নিয়েছেন। গতকাল বৃহস্পতিবার চলমান বিক্ষোভের ৬ষ্ঠ দিনের সামরিক সরকার বিরোধী বিক্ষোভে তারা অংশ নেনI

মিয়ানমারে বিক্ষোভে কারেন, রাখাইন ও কাচিন সদস্যরাও

বিগত বহু দশক ধরে এসব সংখ্যালঘুর বৃহত্তর স্বায়ত্তশাসনের দাবি খর্ব করতে তাদেরকে লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করেছে মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী।

এদিকে, শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদকারীদের ওপর ব্যাপকভাবে শক্তি প্রয়োগে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন মিয়ানমারে জাতিসংঘের মানবাধিকার বিশেষজ্ঞ টম এন্ড্রুস। দেশটির নিরাপত্তা বাহিনীকে সংযত থাকার আহ্বানও জানিয়েছেন তিনি।

চলমান বিক্ষোভের মধ্যেই মিয়ানমারের সামরিক জান্তা দেশটির ২৩ হাজরেরও বেশি বন্দির সাজা মওকুফ করে মুক্তির ঘোষণা দিয়েছে। আজ শুক্রবার সিনিয়র জেনারেল মিন অং হ্লাইং এ ঘোষণা দিয়েছেন বলে রাষ্ট্রায়ত্ত গণমাধ্যমে বলা হয়েছে।

মিয়ানমারে বিক্ষোভে কারেন, রাখাইন ও কাচিন সদস্যরাও

ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, মিন অং হ্লাইংয়ের ঘোষণায় বলা হয়েছে, মিয়ানমার শান্তি-শৃঙ্খলা ও উন্নয়নসহ একটি নতুন গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করছে। এই সময় বন্দিদের সুনাগরিক হিসেবে গড়ে তুলতে, জনগণকে সন্তুষ্ট করতে এবং সেইসঙ্গে মানবিক ও সহানুভূতিশীল পরিস্থিতি তৈরি করতে বন্দিদের সাজা মওকুফ করা হয়েছে।

এরই অংশ হিসেবে মিয়ানমারের ২৩ হাজার ৩১৪ জন এবং বিদেশি ৫৫ জন বন্দির সাজা মওকুফ করা হয়েছে বলে বিবৃতি উল্লেখ করা হয়েছে।

প্রসঙ্গত, গত বছরের ৮ নভেম্বর মিয়ানমারে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এতে অং সান সু চির দল ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্রেসি (এনএলডি) নিরঙ্কুশ জয় পায়। তবে নির্বাচনে অভিযোগ আনে সেনাবাহিনী সমর্থিত দল ইউনিয়ন সলিডারিটি অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট পার্টি (ইউএসডিপি)।

এরই জেরে গত ১ ফেব্রুয়ারি ভোরে অভ্যুত্থান ঘটায় দেশটির সেনাবাহিনী। অথচ ওই দিন থেকে নতুন পার্লামেন্টের অধিবেশন শুরু হওয়ার কথা ছিল। সেনা অভ্যুত্থানে স্টেট কাউন্সিলর অং সান সু চি এবং দেশটির প্রেসিডেন্ট ও এনএলডির অনেক শীর্ষ নেতাকে গ্রেপ্তার করা হয়। এর পর মিয়ানমারে এক বছরের জরুরি অবস্থা জারি করে সেনাবাহিনী।