আপনি পড়ছেন

আগামী বছরগুলোতে আরো চরম আবহাওয়া মোকাবেলা করতে হবে। গত সোমবার প্রকাশিত জাতিসংঘের জলবায়ু বিষয়ক গুরুত্বপূর্ণ এক প্রতিবেদনে এমনটি উল্লেখ করা হয়েছে। জাতিসংঘ মহাসচিব এই প্রতিবেদনকে ‘মানবতার জন্য লাল সংকেত’ বলে উল্লেখ করেছেন। 

wild fire 1গত কয়েক বছরে দাবানলে ধ্বংস হয়ে গেছে লাখ লাখ একর বনভূমি

জলবায়ু বিষয়ক জাতিসংঘের বিশেষ শাখা ইন্টারগভর্নমেন্ট প্যানেল অন ক্লাইমেট চেঞ্জ (আইপিসিসি) প্রতিবেদনটি তৈরি করেছে। আইপিসিসির সদস্যভুক্ত দেশের সংখ্যা ১৯৫। প্রায় দুই সপ্তাহ ধরে আলাপ-আলোচনার পর গত শুক্রবার ৪২ পৃষ্ঠার এ প্রতিবেদনটির অনুমোদন পায়। স্কটল্যান্ডের গ্লাসগো শহরে এ বছরের শেষের দিকে জাতিসংঘের জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক এক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। ওই সম্মেলনের তিন মাস আগে এ প্রতিবেদনটি প্রকাশিত হলো।

সম্প্রতি বিশ্বব্যাপী দাবানল, ঝড়, জলোচ্ছাস, বন্যা ও খরার মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগ বেড়েছে। অতীতে প্রতি ৫০ বছরে যে দাবদাহ বয়ে যেত পৃথিবীর বিভিন্ন অঞ্চলে, এখন তা প্রতিবছরই হচ্ছে। পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তে এখন যে চরম তাপপ্রবাহ, ভারী বৃষ্টিপাত, খরা বা সাইক্লোন হতে দেখা যাচ্ছে- তাতে জলবায়ুর এই পরিবর্তন স্পষ্ট ফুটে উঠেছে।

carbonকার্বন নির্গমন ঠেকানো না গেলে মহা বিপদে পড়বে এ বিশ্ব

এ বছরেই স্মরণকালের সবচেয়ে ভয়াবহ তাপপ্রবাহ মোকাবেলা করেছে কানাডা। ভয়াবহ দাবানলে তুরস্ক, গ্রিস, রাশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের মাইলের পর মাইল বনাঞ্চল পুড়ে গেছে।

এমনই প্রেক্ষাপটে বৈশ্বিক উষ্ণায়নের প্রভাব সম্পর্কে মূল্যায়ন পেশ করতে চলেছে জাতিসংঘের সংশ্লিষ্ট দফতর। জেনেভায় সোমবার থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত মোট চারটি রিপোর্ট প্রকাশিত হবে। ৬৬ দেশের ২৩৪ জন লেখক এর সংকলনের কাজে নিয়োজিত আছেন।

সাত বছর আগে শেষ বার সার্বিক পরিস্থিতির এমন বিস্তারিত মূল্যায়ন করা হয়েছিল। ১৯৯০ সাল থেকে এই নিয়ে মোট ছয়বার জাতিসংঘ এমন রিপোর্ট পেশ করেছে।

আইপিসিসির ৪২ পৃষ্ঠার প্রতিবেদনে বলা হয়, দীর্ঘ গবেষণায় দেখা গেছে, জলবায়ু ব্যবস্থায় সাম্প্রতিক পরিবর্তনের মাত্রা নজিরবিহীন। এক দশকে চরম তাপপ্রবাহ, খরা, বন্যা বেড়েছে; সীমা ছাড়িয়েছে তাপমাত্রা। মানুষের কর্মকাণ্ডের কারণেই জলবায়ুতে অভূতপূর্ব এ পরিবর্তন আসছে। কখনো পরিবর্তনটা এত বড় আকারে আসছে যে, তা আবার আগের অবস্থায় নেয়া সম্ভব হচ্ছে না।

আরো বলা হয়, শিল্পযুগের আগে পৃথিবীপৃষ্ঠের যে গড় তাপমাত্রা ছিলো তা আগামী ২০৩০ সালের মধ্যে ১ দশমিক ৫ ডিগ্রি বৃদ্ধি পাবে। এই তাপমাত্রা বৃদ্ধির জন্য এর আগে যতটা সময় লাগবে বলে ধারণা করা হয়েছিল, এখন বলা হচ্ছে তার দশ বছর আগেই সেটা ঘটে যাবে। এছাড়া এ শতকের শেষভাগে সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বেড়ে যাবে ২ মিটার।

জাতিসংঘ বলছে, এর ফলে সারা বিশ্বে চরম আবহাওয়া পরিস্থিতি তৈরি হবে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, একমাত্র কার্বন নির্গমনের মাত্রা কমিয়েই এই পরিবর্তনের গতি কমানো সম্ভব।

জাতিসংঘ মহাসচিব এই প্রতিবেদনকে ‘মানবতার জন্য লাল সংকেত’ বলে উল্লেখ করেছেন। এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, আমরা যদি এখনই সবাই মিলে চেষ্টা করি তাহলে তাহলে হয়তো জলবায়ু বিপর্যয় এড়ানো সম্ভব। এ প্রতিবেদন স্পষ্ট করে দিয়েছে, দেরি করার মতো সময় নেই অজুহাতেরও কোনো সুযোগ নেই।

তিনি বলেন, দেশগুলোর নতুন করে সমস্ত জীবাশ্ম জ্বালানি অনুসন্ধান ও উৎপাদন বন্ধ করা দরকার। বরং এ খাতের ভর্তুকি নবায়নযোগ্য শক্তিতে স্থানান্তর করা উচিত।

আইপিসিসির প্রতিবেদনের কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়

১৮৫০-১৯০০ সালের তুলনায় ভূপৃষ্ঠের তাপমাত্রা ২০১১-২০২০ সালে ১.০৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেশি ছিল।
১৮৫০ সাল থেকে এ পর্যন্ত সময়ের মধ্যে গত পাঁচ বছর পৃথিবীর তাপমাত্রা ছিল ইতিহাসে সর্বোচ্চ।
১৯০১-১৯৭১ সালের তুলনা করলে সাম্প্রতিক সামুদ্রিক উচ্চতা বৃদ্ধির হার বেড়েছে প্রায় তিনগুণ।
১৯৯০-এর দশক থেকে হিমবাহ ধস ও অ্যান্টার্কটিকায় সামুদ্রিক বরফ কমে যাওয়ার পেছনে প্রধান দায়ী (৯০ শতাংশ) মনুষ্য প্রভাব।
১৯৫০-এর দশক থেকে দাবদাহসহ গরমের প্রবণতা নিয়মিত ও তীব্র হয়ে উঠেছে।

গুগল নিউজে আমাদের প্রকাশিত খবর পেতে এখানে ক্লিক করুন...

খেলাধুলা, তথ্য-প্রযুক্তি, লাইফস্টাইল, দেশ-বিদেশের রাজনৈতিক বিশ্লেষণ সহ সর্বশেষ খবর

Stay up-to-date with the latest news from Bangladesh. Our comprehensive coverage includes politics, business, sports, and culture. Get breaking news, analysis, and commentary on the issues that matter most to Bangladeshis and the international community.

Bangladesh is a country located in South Asia and is home to a diverse population of over 160 million people. It has a rich cultural heritage and a rapidly growing economy. News from Bangladesh covers a wide range of topics, including politics, economics, social issues, culture, and more. The country has made significant progress in recent years in areas such as poverty reduction, education, and healthcare. However, it still faces challenges such as corruption and environmental degradation. Bangladeshi news sources cover both local and international news to keep the public informed about the latest developments and events.