তালেবান-সিআইএ ‘গোপন’ বৈঠক, কমিশন করবে জাতিসংঘ

যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় গোয়েন্দা সংস্থা সিআইএর পরিচালক উইলিয়াম বার্নস কাবুলে তালেবানের শীর্ষ নেতা মোল্লা আবদুল গনি বারদারের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। আফগানিস্তানের নিয়ন্ত্রণ তালেবানের হাতে চলে যাওয়ার পর যুক্তরাষ্ট্র তাদের লোকজন সরিয়ে নিচ্ছে। এ ক্ষেত্রে কাবুলের আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে জটিল পরিস্থিতি তৈরি হচ্ছে। মূলত এ ব্যাপারেই কথা বলতেই মার্কিন শীর্ষ গোয়েন্দা সংস্থার প্রধান তালেবান নেতার সঙ্গে বৈঠক করেছেন বলে মনে করা হচ্ছে। অপরদিকে, জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশন আফগানিস্তানে মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিষয় পর্যবেক্ষণ করতে ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং কমিশন গঠন করতে যাচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্র কর্তৃপক্ষের বরাত দিয়ে আরব নিউজ এ খবর দিয়েছে।

মোল্লা আবদুল গনি বারদার ও উইলিয়াম বার্নস

খবরে বলা হচ্ছে, জি-৭ দেশগুলোর বৈঠক সামনে রেখেই মূলত সিআইএ প্রধান এ অঞ্চলে সফর করছেন। দেশগুলোর নেতারা বৈঠকে আফগান পরিস্থিতি নিয়েই আলোচনা করবেন। তাদের পর্যবেক্ষণে রয়েছে তালেবানের দেশ পরিচালনার কৌশল। তালেবান মানবাধিকার রক্ষায় সচেষ্ট হবে কিনা, বিশেষ করে নারীর অধিকার তারা রক্ষা করবে কিনা এবং জাতিসংঘের মানবাধিকার সংস্থাকে দেওয়া প্রতিশ্রুতি তালেবান রক্ষা করবে কিনা সেসব বিষয়ে আলোচনা হবে বলে মনে করা হচ্ছে।

তালেবান কাবুল দখলের পর জাতিসংঘ মানবাধিকার সংস্থার প্রধান মিশেল ব্যাচেলেট বেশ গভীরভাবে আফগান পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছেন বলে জানিয়েছেন। দেশটিতে মানবাধিকার লঙ্ঘন হয় কিনা, বিশেষ করে নারীরা তাদের অধিকার নিয়ে চলতে-ফিরতে পারছে কিনা তার প্রতিদিনকার রিপোর্ট সংরক্ষণ করা হচ্ছে সংস্থাটির পক্ষ থেকে। তালেবানের ওপর থেকে যাতে আন্তর্জাতিক নজর না কমে যায় সেজন্য বিষয়গুলো খুবই গুরুত্ব সহকারে পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে।

তালেবান নেতারা জাতিসংঘ ও বিশ্বনেতাদের দেওয়া প্রতিশ্রুতি রক্ষা করার নিশ্চয়তা দিয়েছে। তবে কাবুল বিমানবন্দরে দেশটির নাগরিকরা দেশ ত্যাগের জন্য ভিড় করছে। এই প্রক্রিয়া কেন্দ্রিক কঠোরতা অবলম্বন করেছে তালেবান। তারা যুক্তরাষ্ট্রকে ৩১ আগস্টের মধ্যেই তাদের লোকজন সরিয়ে নেওয়ার জন্য চাপ দিচ্ছে। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্র তাদের নাগরিকদের সরিয়ে নিতে আরও কিছু সময় চাচ্ছে।

এদিকে তালেবান নেতা মোল্লা বারদারের সঙ্গে বৈঠকের বিষয়টি নিশ্চিত করেছে যুক্তরাষ্ট্র। তবে বৈঠকে কী আলোচনা হয়েছে তা কেউ প্রকাশ করেননি। তবে মঙ্গলবার জি-৭ নেতারা আফগান থেকে তাদের নাগরিকদের নিরাপদে সরিয়ে নেওয়ার ব্যাপারে আলোচনায় জোর দেবেন বলে খবরে বলা হচ্ছে।

এদিকে জাতিসংঘ মানবাধিকার সংস্থার প্রধান মিশেল ব্যাচেলেট মঙ্গলবার হুমকি দিয়েছেন, আফগানে মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা ঘটলে বিশ্ব কঠোর ব্যবস্থা নেবে তালেবানের বিরুদ্ধে। তিনি বলেন, আফগান জনগণ তাদের অধিকার রক্ষায় এখন জাতিসংঘের দিকে তাকিয়ে আছে। আমরা তালেবান শাসন ব্যবস্থার ওপর কঠোর নজর রাখছি।

ব্যাচেলেট জানাচ্ছেন, আফগান পরিস্থিতির ওপর নজর রাখতে শিগগির একটি ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং কমিশন গঠন করা হবে এবং একজন স্পেশাল র্যা পোর্টিয়ার নিয়োগ দেওয়া হবে। এর আগে নরওয়েভিত্তিক একটি মানবাধিকার সংস্থা অভিযোগ করে, যেসব নাগরিক সাবেক প্রেসিডেন্ট আশরাফ ঘানি সরকারের সহযোগিতা করেছে তাদের কালো তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করছে তালেবান।