ইসরায়েলি ১০০ যুদ্ধড্রোন কিনছে ভারত, নেপথ্যে ৩ কারণ

উচ্চক্ষমতা সম্পন্ন ইসরায়েলি ১০০টি যুদ্ধড্রোন কেনার উদ্যোগ নেয়ার কথা জানিয়েছে ভারত সরকার। তবে নিরাপত্তা সংক্রান্ত কারণে এ বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য প্রকাশ করেনি দেশটি। এ ঘটনাকে দুই দেশের মধ্যকার সম্পর্ক ক্রমেই জোরদার হওয়ার সর্বশেষ অগ্রগতি হিসেবে দেখা হচ্ছে। ইসরায়েলের সঙ্গে ভারতের তিন দশকের সম্পর্ক হলেও হিন্দুত্ববাদী বিজেপির আমলে তা নতুন মাত্রা পেয়েছে বলে মনে করেন বিশ্লেষকরা।

তেল আবিবের যুদ্ধড্রোন ও ইনসেটে ভারত-ইসরায়েলের পতাকা

পার্সটুডে জানায়, ১৯৮০-এর দশকে তেল আবিবের সঙ্গে গোপনে সম্পর্ক স্থাপন করে নয়াদিল্লি, তা প্রকাশ্য রূপ নেয় ৯০’র দশকে। এরপর ধীরগতিতে দুই দেশের সম্পর্ক এগুলোও নরেন্দ্র মোদি ক্ষমতায় আসার পর হঠাৎ করেই বেড়েছে বহুগুণ। বর্তমানে নিরাপত্তা ও সামরিকসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে সম্পর্ক ও সহযোগিতা উত্তরোত্তর বাড়িয়ে চলেছে ইসরায়েল-ভারত।

বিশ্লেষকরা বলছেন, প্রধানত তিনটি লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যে তেল আবিব-দিল্লি সম্পর্ক ক্রমেই গভীর হচ্ছে। এর প্রথমটি হলো- ইসরায়েলকে খুশি করে ইহুদিবাদী লবিংর সাহায্যে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সহযোগিতা বাড়াতে চায় ভারত। প্রতিবেশী পাকিস্তান ও চীনকে টেক্কা দিতে ওয়াশিংটনের ঘনিষ্ঠ হওয়ার ক্ষেত্রে কার্যত লাভবান হয়েছে মোদি সরকার। আবার এতে দক্ষিণ এশিয়ায় ইহুদিবাদী লবিংয়ের প্রধান কেন্দ্রে পরিণত হয়েছে দিল্লি, যার সুফল পাচ্ছে তেল আবিবও।

পাকিস্তান ও চীনের পতাকা

দ্বিতীয়ত, ফিলিস্তিনের ভূমি দখল করে আরবদের প্রতিরোধ আন্দোলন দমনের ইসরায়েলি অভিজ্ঞতা ও কৌশল নিয়ে আগ্রহী ভারত। কারণ একইভাবে অধিকৃত জম্মু-কাশ্মিরের মুসলিমদের প্রতিরোধ দমন করতে চায় মোদি সরকার। এতে উভয় দেশের লাভ হলেও কার্যত অর্থনৈতিকভাবে বেশি লাভ তেল আবিবের। কেননা, এই পরিকল্পনা বাস্তবায়নে ইসরায়েলি অস্ত্রের অন্যতম ক্রেতা হয়ে উঠছে দিল্লি।

তৃতীয়ত, যে বিষয়টি উভয় দেশের মধ্যে সম্পর্ক জোরদারে সহায়তা করছে, তা হলো- পাকিস্তান-চীনের মোকাবেলায় ভারতের ক্ষেপণাস্ত্র ও পরমাণু শক্তির উন্নয়ন ও বিস্তার ঘটনানো। এই সুযোগে দখলদার ইসরায়েল ও তাদের অস্ত্র-প্রযুক্তি এই অঞ্চলে প্রবেশ করছে, আর্থিকভাবে লাভবান হওয়ার পাশাপাশি দক্ষিণ এশিয়ায় প্রভাব বিস্তারের সুযোগ পাচ্ছে তেল আবিব।

এ বিষয়ে কাতারের মার্কিন ব্রুকিংস গবেষণা সংস্থার দপ্তর বলছে, এই অসম সম্পর্কের মূলে রয়েছে নিরাপত্তা সংক্রান্ত সহযোগিতা। এর ওপর ভর করে ইসরায়েলি অস্ত্রের বৃহত্তর ক্রেতায় পরিণত হয়েছে ভারত। সর্বশেষ ১০০টি যুদ্ধড্রোন কেনার উদ্যোগ যার জ্বলন্ত উদাহরণ।