ইউরোপে তীব্র গ্যাস সংকট, প্রথমবারের মতো কারখানা বন্ধ

ইউরোপে জ্বালানি সংকট তীব্র আকার ধারণ করছে। প্রাকৃতিক গ্যাসের দাম বৃদ্ধি এবং মজুদের অভাবে এই অঞ্চলের অর্থনীতিকে শক্তিশালী করতে বাধাগ্রস্ত করছে। এই পরিস্থিতির মধ্যে মার্কিনভিত্তিক সার কোম্পানি সিএফ ইন্ডাস্ট্রিজ হোল্ডিংস ইনকর্পোরেটেড তাদের যুক্তরাজ্যের কারাখানায় উৎপাদন বন্ধের ঘোষণা দিয়েছে। দ্য ইপোক টাইমস।

ইউরোপে তীব্র গ্যাস সংকট

খবরে বলা হচ্ছে, সিএফ ইন্ডাস্ট্রিজ প্রাকৃতিক গ্যাসের উচ্চমূল্যের কারণে যুক্তরাজ্যের দুটি কারখানায় উৎপাদন বন্ধ করতে বাধ্য হয়েছে। বিশ্লেষকদের আশঙ্কা, অন্যান্য কোম্পানিগুলোও তাদের ক্ষতি এড়াতে একই ধরনের পদক্ষেপ নিতে পারে। কারণ কাঁচামালের মূল্যস্ফীতি অর্থনীতি দুর্বল হওয়ার ঝুঁকি বাড়ায়।

ইলিনয়ভিত্তিক সংস্থাটি প্রাকৃতিক গ্যাসের উচ্চমূল্যকে দায়ী করেছে কারখানা বন্ধের কারণ হিসেবে। তবে কারখানা দুটি তারা কবে খুলবে তার তারিখ নির্দিষ্ট করেনি। সিএফ ইন্ডাস্ট্রিজ বিশ্বে একটি অন্যতম প্রধান সার উৎপাদনকারী সংস্থা। কোম্পানিটি বিশ্বে একটি বড় কোম্পানি। ইউরোপে তাদের উৎপাদন বন্ধ হলে এর প্রভাব পুরো মহাদেশে ছড়িয়ে পড়বে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সিএফ ইন্ডাস্ট্রিজ অ্যামোনিয়াম নাইট্রেড উৎপাদন করে থাকে। দুটি কারখানা বন্ধে এ পণ্যের আন্তর্জাতিক মূল্যে প্রভাব পড়বে। পণ্য পরামর্শদাতা সংস্থা আইসিআইএসের জুলিয়া মিহান ফিনান্সিয়াল টাইমসকে বলেন, এই বিষয়টির বাস্তবতা হল অ্যামোনিয়া তৈরির জন্য গ্যাসের প্রয়োজন এবং প্রায় প্রতিটি নাইট্রোজেন সার তৈরির জন্য অ্যামোনিয়া প্রয়োজন।

জুলিয়া বলছেন, বৈশ্বিক সার সেক্টরের মধ্যে সিএফ ইন্ডাস্ট্রিজ যেহেতু বড় অবস্থানে রয়েছে, সেহেতু অন্য কোম্পানিগুলোতে একই সংকট পড়বে এবং তারাও কারখানা বন্ধের মতো সিদ্ধান্ত নিতে পারে। ব্লুমবার্গ ইন্টেলিজেন্স বিশ্লেষক আলেক্সিস ম্যাক্সওয়েল বলছেন, কোনো কোম্পানি উৎপাদন বন্ধ করলে আন্তর্জাতিকভাবে পণ্য উৎপাদন খরচ বেড়ে যায় এবং কোম্পাতি লোকসানে পড়ে।

ওই কারখানা বন্ধের সবচেয়ে নেতিবাচক দিক হল, পুরো ব্যাপারটি ইউরোপের জ্বালানি সংকটকে নির্দেশ করছে এবং অন্যান্য কোম্পানিগুলোকে একই সংকটে ফেলে দেবে।

ম্যাক্সওয়েল বলেন, অন্য ইউরোপীয় কোম্পানিও বন্ধ হওয়ার শঙ্কা রয়েছে। ফলে বাজারে এটির মারাত্মক প্রভাব পড়বে এবং নাইট্রোজেনের দাম বাড়তেই থাকবে।

খবরে বলা হচ্ছে, বিশ্বব্যাপী সারের দাম ইতোমধ্যেই চড়া পর্যায়ে রয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের নিউ অরলিন্সে হারিকেন ইডার আঘাত হানার পর এ দাম আরও বৃদ্ধি পেয়েছে। ডায়ামোনিয়া ফসফেট ২০০৮ সালের পর সর্বোচ্চ বৃদ্ধি পেয়েছে। ইউরিয়া সারের দামও লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে।

বিএমও ক্যাপিটাল মার্কেটের বিশ্লেষক জোয়েল জ্যাকসন বলেন, আগামী দিনে ইউরোপজুড়ে আরও নাইট্রোজেন এবং রাসায়নিক পদার্থের উৎপাদন বন্ধ হলে আমরা অবাক হব না।