বেটি বাঁচাও, বেটি পড়াও: বিজ্ঞাপনেই খরচ ৮০ শতাংশ!

সরকারের পক্ষ থেকে এগিয়ে যাওয়ার দাবি করা হলেও ভারতে নারীরা এখনো অনেক পিছিয়ে। বিশেষকরে উদ্বেগের বিষয় নারীর হেনস্তা হওয়ার বিষয়টি। দেশটিতে নারীরা লিঙ্গবৈষম্যের শিকার হচ্ছেন পদে পদে। কন্যাভ্রূণ হত্যার মতো ঘটনা বন্ধ হয়নি। আবার কন্যাসন্তান জন্ম দেওয়ার কারণে নারীর ওপর অত্যাচারের ঘটনাও ঘটে আকছার।

মোদির ‘বেটি বাঁচাও বেটি পড়াও’ প্রকল্প

এ অবস্থায় দেশ থেকে লিঙ্গবৈষম্য দূরীকরণ, কন্যাভ্রূণ হত্যাসহ নারীর ওপর বিভিন্ন ধরনের অনাচার রোধে ২০১৫ সালের জানুয়ারি মাসে ‘বেটি বাঁচাও বেটি পড়াও’ প্রকল্প চালু করেছিলেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।

কিন্তু সেই প্রকল্প নিয়েই এখন প্রশ্ন উঠেছে। অভিযোগ উঠেছে, প্রকল্পে প্রচারেই বেশি জোর, কাজের ক্ষেত্রে নয়। তাও আবার এমন অভিযোগ বিরোধীরা আনেনি বরং নারীকল্যাণ বিষয়ক সংসদীয় কমিটির সাম্প্রতিক রিপোর্টে এই তথ্য তুলে ধরা হয়েছে। বলা হয়েছে, প্রকল্পের বরাদ্দের ৭৮.৯১ শতাংশই খরচ হয়ে যাচ্ছে বিজ্ঞাপনে।

লিঙ্গবৈষম্য ভারতের বহু পুরনো এক সমস্যা

জানা গেছে, প্রকল্প চালুর পর থেকেই জোরদার প্রচার চলছে। দেশের প্রায় প্রত্যেকটি সংবাদপত্র, টিভি চ্যানেলসহ বিভিন্ন গণমাধ্যমে মোদি সরকারের এই প্রকল্পের বিজ্ঞাপন দেয়া হয়। প্রথম বছর থেকেই এ পরিস্থিতি দেখা গেলেও প্রকল্পের দ্বিতীয় থেকে চতুর্থ বর্ষের খরচ সম্পর্কিত তথ্য দেখে অনেকেই আঁতকে উঠেছেন। কারণ প্রকল্প বাস্তবায়নের তুলনায় বিজ্ঞাপনেই খরচ করা হয়েছে অনেক গুণ বেশি অর্থ।

বিজেপি এমপি হিনা গাভিটের নেতৃত্বাধীন সংসদীয় কমিটির রিপোর্ট অনুযায়ী, ২০১৬ থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত তিন বছরে প্রধানমন্ত্রীর ‘বেটি বাঁচাও বেটি পড়াও’ প্রকল্পে মোট ৪৪৬ কোটি ৭২ লক্ষ টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। তার ৭৮.৯১ শতাংশই ব্যয় হয়েছে বিজ্ঞাপন খাতে।

প্রশ্ন উঠছে, কোনো প্রকল্পের বরাদ্দের ৮০ ভাগই যদি বিজ্ঞাপনে খরচ হয়ে যায়, তাহলে মূল প্রকল্প বাস্তবায়নে অর্থ কোথায় পাওয়া যাবে? সেই প্রকল্প বাস্তবায়িত হবেইবা কী করে? এ বিষয়ে এখন পর্যন্ত কেন্দ্রের পক্ষ থেকে কোনো উত্তর পাওয়া যায়নি।