যুক্তরাষ্ট্রে সাবেক আফগান মন্ত্রীদের বিলাসী জীবন

বছরের পর বছর ধরে যুদ্ধপীড়িত আফগানিস্তানের অধিকাংশ মানুষেরই অবস্থান দারিদ্র্যসীমার নিচে। সে দেশেরই সাবেক মন্ত্রী-আমলারা পরিবারসহ বিদেশে বিলাসী জীবন যাপন করছেন। ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের প্রতিবেদনের তথ্য নিয়ে এ কথা জানিয়েছে তোলো নিউজ।

এমন বিলাসবহুল বাড়িতে অবস্থান করছেন আফগানিস্তানের সাবেক মন্ত্রী-আমলারা

ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের প্রতিবেদনে বলা হয়, আফগানিস্তানের সাবেক সরকারের প্রভাবশালী মন্ত্রী-আমলারা সাম্প্রতিক বছরগুলোতে যুক্তরাষ্ট্রসহ বিশ্বের অন্যান্য দেশে বাড়ি কিনতে মিলিয়ন মিলিয়ন ডলার ব্যয় করেছেন। সাবেক আফগান অর্থমন্ত্রী একলাল হাকিমি এখন যুক্তরাষ্ট্রে এরকম ১০টি সম্পত্তির মালিক।

পাবলিক নথি, সাক্ষাৎকার ও অন্যান্য রেকর্ডের পর্যালোচনায় ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল জানায়, সাবেক প্রেসিডেন্ট আশরাফ ঘানির ২০১৪ সালে শুরু হওয়া শাসনামলের প্রভাবশালী ও উচ্চস্তরে চাকরি করা কিছু কর্মকর্তা এখন ক্যালিফোর্নিয়ার উপকূলে বিভিন্ন প্রাসাদে বসবাস করছেন।

সাবেক অর্থমন্ত্রী একলাল আহমেদ হাকিমি

প্রতিবেদনে সাবেক এনএসএ হামদুল্লাহ মহিব, সাবেক অর্থমন্ত্রী একলাল আহমেদ হাকিমি, বলখের সাবেক গভর্নর আত্তা মুহাম্মদ নুর, ঘানি প্রশাসনের শেষ অর্থমন্ত্রী খালিদ পায়েন্দা এবং অর্থনীতিবিষয়ক মন্ত্রী মুস্তফা মাস্তুরের নাম উল্লেখ করা হয়।

রাজনৈতিক বিশ্লেষক তারেক ফরহাদি বলেন, দুর্ভাগ্যবশত আফগানিস্তানে গত দুই দশক ধরে লুটপাটের একটি সংস্কৃতি প্রচলিত ছিল। দেশটিতে তখনও শুল্ক, তেল ও নিয়োগের অর্থ লুট করা হয়েছিল, যখন রণাঙ্গনে সৈন্যরা যুদ্ধের লাইনে দাঁড়িয়ে খাবার পাননি।

ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের প্রতিবেদনটির লেখিকা জেসিকা ডোনাটি টুইটারে লেখেন, উপরোক্ত বর্ণনাটি আসলে আমরা যা শুনেছি তার একটি ক্ষুদ্র অংশ। কারণ অনেক কর্মকর্তা পরিবারের সদস্যদের এবং মধ্যস্বত্বভোগীদের ব্যবহার করে তাদের অর্থ দেশের বাইরে নিয়ে যেতেন। পাবলিক নথির অভাবের কারণে সেসব তথ্য যাচাই করা কঠিন ছিল।

আফগানিস্তানের ন্যাশনাল সলিডারিটি মুভমেন্টের নেতা সাইয়েদ ইসহাক গিলানি বলেন, সাবেক এসব আফগান কর্মকর্তা তাদের জাতির সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করেছেন। যদি তাদের শাস্তি দেওয়া হয় এবং তাদের কাছ থেকে অর্থ ফেরত নেওয়া হয় তবে সেটা অন্যদের জন্য উপদেশ হয়ে থাকতো।

এ প্রতিবেদনে নাম উল্লেখ করা বেশিরভাগ সাবেক মন্ত্রী-আমলা কোনো মন্তব্য করেননি। তবে আফগানিস্তানের সাবেক অর্থমন্ত্রী খালিদ পায়েন্দা একটি চিঠিতে বলেছেন, তিনি এই প্রতিবেদনে ক্ষুব্ধ এবং প্রতিবেদক তার দেওয়া বিবরণ উপেক্ষা করেছেন।

উল্লেখ্য, আফগানিস্তানের মানবিক সংকট নিয়ে অনেক মানবিক সংস্থা উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। তারা জানায়, দেশটির আনুমানিক ৯০ শতাংশ মানুষ দারিদ্র্যসীমার নিচে বসবাস করছে।