ইউরোপের ওপর নিজের মতো করে প্রতিশোধ নিচ্ছেন পুতিন!

যুদ্ধবিধ্বস্ত ইউক্রেনের প্রতি সমর্থন জানাতে কিয়েভে উপস্থিত হয়েছেন ইউরোপের চার দেশের রাষ্ট্রপ্রধান। তাদের ওপর কোনো হামলা চালায়নি মস্কো। কিন্তু তারা সেখানে থাকতেই রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট পুতিন বুঝিয়ে দিয়েছেন, তার প্রতিশোধ নেয়ার ধরনটাই আলাদা। জার্মানি, ইতালিসহ ইউরোপের বিভিন্ন রাষ্ট্রের গ্যাস সরবরাহ কমিয়ে দিয়ে রীতিমতো হাহাকার পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে রাশিয়া। খবর নিউইয়র্ক টাইমস।

ইউরোপে গ্যাসের সরবরাহ অনেকটাই কমিয়ে দিয়েছে রাশিয়া

একসাথে কিয়েভে উপস্থিত হয়েছেন জার্মানির চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎজ, ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাখোঁ, ইতালির প্রধানমন্ত্রী মারিও দ্রাঘি ও রোমানিয়ার প্রেসিডেন্ট ক্লস ইয়োহানিস। মারিনস্কি প্রাসাদে জেলেনস্কির সাথে এই চার রাষ্ট্রনেতা গোলটেবিল বৈঠকে বসেন। ইউক্রেনের প্রতি সহানুভূতি জানানোর পাশাপাশি আগামী দিনে সহায়তার ধরন নিয়ে আলোচনা হয়। বিশেষ করে ইউক্রেনের ইউরোপীয় ইউনিয়নে সদস্য হওয়ার বিষয়টি অগ্রাধিকার পায়।

স্বাভাবিকভাবেই সফররত রাষ্ট্রপ্রধানরা ইউক্রেনে হামলার জন্য রাশিয়ার তীব্র সমালোচনা করেন এবং ইউক্রেনকে লড়াই চালিয়ে যেতে উৎসাহ দেন। তারা প্রত্যয় ব্যক্ত করেন, শেষ পর্যন্ত ইউক্রেনেই এ লড়াইয়ে জয়ী হবে।

ইউক্রেনে সফররত চার দেশের রাষ্ট্রপ্রধানদের সাথে জেলেনস্কি

এদিকে তারা যখন ইউক্রেনকে সাহস যোগাচ্ছিলেন, তখন গ্যাস নিয়ে মাতম চলছিল জার্মানি, ইতালিসহ ইউরোপের বিভিন্ন দেশে। জার্মানি ও ইতালিতে রাশিয়ার গ্যাস সরবরাহ উল্লেখযোগ্য মাত্রায় কমেছে। পূর্ব কোনো ঘোষণা ছাড়াই এভাবে গ্যাসের সরবরাহ কমে যাওয়ার ব্যাপারে গ্যাজপ্রম জানিয়েছে, বিভিন্ন লাইনে সমস্যা থাকায় এবং সেগুলোর মেরামত চলতে থাকায় গ্যাস সরবরাহে বিঘ্ন ঘটছে। তবে ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলো বলছে, এগুলো কেবলই অজুহাত। ইউরোপীয় কর্মকর্তারা প্রকাশ্যে পুতিনের বিরুদ্ধে জ্বালানি সরবরাহকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করার অভিযোগ এনেছেন।

বৃহস্পতিবার কিয়েভে একটি সংবাদ সম্মেলনে ইতালির প্রধানমন্ত্রী দ্রাঘিকে এ সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলেন, আমরা, জার্মানি এবং অন্যান্য দেশ বিশ্বাস করি যে এগুলো মিথ্যা।খাদ্যশষ্যের যেমন রাজনৈতিক ব্যবহার রয়েছে, তেমনি গ্যাসেরও। আর সেটাই করা হচ্ছে।

ইউক্রেনে হামলা জেরে অনেক দেশ যেমন রাশিয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে, তেমনি রাশিয়াও প্রয়োজনমতো তেল-গ্যাসকে তার হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করেছে। গত মাসে ফিনল্যান্ড ন্যাটো সদস্য হতে আবেদন করলে রাশিয়া সে দেশে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ করে দেয়। একই সাথে গ্যাস সরবরাহেও বিঘ্ন ঘটায়। পোল্যান্ড ও বুলগেরিয়ায়ও গত এপ্রিলে গ্যাস সরবরাহ বন্ধ করে দেওয়া হয়।

তবে গ্যাস সরবরাহ সরাসরি বন্ধ করে দেয়নি রাশিয়া। তাদের প্রথমে রুবলে গ্যাসের দাম পরিশোধে বাধ্য করা হয়েছে। যেসব দেশ রুবলে বিল পরিশোধ করতে অনাগ্রহ দেখিয়েছে কেবল তাদেরই গ্যাস দেওয়া বন্ধ করে দিয়েছে রাশিয়া।

গ্যাস সরবরাহ বন্ধ করে দেওয়ায় রাশিয়ার আর্থিক ক্ষতি হয়েছে তেমনটি নয়। কারণ গ্যাসের দাম বেড়ে গেছে।