ব্ল্যাকআউটের কবলে পূর্ব ইউক্রেন, অন্ধকারে ৯০ লাখ মানুষ!

ইউক্রেনীয় সৈন্যদের পাল্টা আক্রমণে রাশিয়ান সেনাবাহিনী পিছু হটতে বাধ্য হওয়ার একদিন পর ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চল পুরোপুরি ব্ল্যাকআউটের শিকার হয়েছে। প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি ইচ্ছাকৃতভাবে এই অঞ্চলের বেসামরিক অবকাঠামোকে লক্ষ্যবস্তু করার অভিযোগ করেছেন মস্কোর বিরুদ্ধে। খবর আল জাজিরা।

ব্ল্যাকআউটের কবলে খারকিভের একটি এলাকা

ব্ল্যাকআউটে বিপর্যস্ত পূর্ব ইউক্রেন অঞ্চলের একটি বড় অংশ গতকাল রোববার বিদ্যুৎ বিভ্রাট এবং পানি সরবরাহে তীব্র সংকটের শিকার হয়েছে। এর ফলে ৯০ লাখেরও বেশি মানুষ সমস্যায় পড়েছে বলে জানা গেছে।

খারকিভ অঞ্চলের গভর্নর ওলেগ সিনেগুবভ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দেওয়া এক বিবৃতিতে বলেছেন, বেশ কয়েকটি লোকালয়ে বিদ্যুৎ বা পানির সরবরাহ নেই। পরে সন্ধ্যায় সুমি, ডিনিপ্রপেট্রোভস্ক, পোলতাভা, জাপোরিঝিয়া ও ওদেসা অঞ্চল থেকে অনুরূপ রিপোর্ট আসে।

রুশ হামলায় আগুন ধরে যায় ইউক্রেনের একটি বিদ্যুৎকেন্দ্রে

এদিকে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট মস্কোর বিরুদ্ধে ইচ্ছাকৃতভাবে বেসামরিক অবকাঠামোতে আঘাত করার অভিযোগ করেছেন। এজন্য ‘রুশ সন্ত্রাসীদের’ দোষারোপ করে সোশ্যাল মিডিয়ায় এক বিবৃতিতে জেলেনস্কি বলেন, রুশ সন্ত্রাসীদের হামলায় খারকিভ ও দোনেৎস্ক অঞ্চল পুরোপুরি এবং জাপোরিঝিয়া, ডিনিপ্রোপেট্রোভস্ক ও সুমি অঞ্চল আংশিক ব্ল্যাকআউটের কবলে পড়েছে।

তিনি বলেন, কোনো সামরিক স্থাপনায় নয় বরং বেসামরিক স্থাপনায় হামলা চালিয়ে এ পরিস্থিতির সৃষ্টি করেছে রাশিয়ার সেনারা। এর মূল লক্ষ্যই হচ্ছে, আলো ও তাপ থেকে বঞ্চিত করে মানুষকে বিপদে ফেলা।

আল জাজিরার হোদা আবদেল হামিদ খারকিভ থেকে এক রিপোর্টে জানিয়েছেন, দেশের উত্তর-পূর্ব এবং পূর্বাঞ্চলের পাঁচটি অঞ্চল বিদ্যুৎ বিভ্রাটে পড়েছে। ইউক্রেনের কর্মকর্তারা দাবি করছেন, রুশ সেনারা গুরুত্বপূর্ণ বেসামরিক অবকাঠামোতে আঘাত করেছে। পুরো শহর এখন অন্ধকারে ছেয়ে গেছে। অবশ্য সুমি, ডিনিপ্রোপেট্রোভস্ক ও পোলতাভা অঞ্চলের কর্মকর্তারা বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন ঘোষণার কিছুক্ষণ পরই বলেছিলেন, বিদ্যুৎ পুনরুদ্ধার করা হয়েছে।

ইউক্রেনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, রাশিয়ার আক্রমণে রেলপথও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এর ফলে দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর খারকিভসহ পূর্বাঞ্চলে ট্রেন পরিষেবায় বিলম্বের ঘোষণা দেয় জাতীয় ট্রেন কর্তৃপক্ষ। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ওলেগ নিকোলেঙ্কো বলেন, পূর্ব ইউক্রেনে রাশিয়ার সেনাবাহিনী বিপুল ক্ষয়ক্ষতির পর পশ্চাদপসরণে বাধ্য হওয়ার হতাশা থেকে তারা এসব কাজ করেছে।

রাশিয়া সাম্প্রতিক হামলার নিন্দা জানিয়ে ডিনিপ্রোপেট্রোভস্ক অঞ্চলের প্রধান দিমিত্রো রেজনিচেঙ্কো একটি অনলাইন বিবৃতিতে বলেন, যুদ্ধে পরাজয় মেনে নিতে না পেরে তারা ইউক্রেনের বিদ্যুৎ স্থাপনায় আঘাত হেনেছে।