প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে করোনাক্রান্ত ডিজি, ব্যবস্থা নিতে আইনি নোটিশ

নভেল করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) আক্রান্ত হয়েও প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করা ডাক বিভাগের মহাপরিচালক (ডিজি) সুধাংশু শেখর ভদ্রের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে সরকারকে আইনি নোটিশ পাঠিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের দুই আইনজীবী। আজ শনিবার ই-মেইলের মাধ্যমে এ নোটিশ পাঠানো হয়।

করোনা নিয়ে গণভবনে ডাক বিভাগের ডিজি সুধাংশু শেখর ভদ্র

নোটিশটি পাঠিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টর মোহাম্মদ কাউছার এবং ব্যারিস্টার মোহাম্মদ হুমায়ূন কবির পল্লব। ই-মেইলে নোটিশটি পাঠানো হয় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মুখ্য সচিব, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সচিব, ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের সচিব, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব, স্বাস্থ্য বিভাগের মহাপরিচালক (ডিজি) এবং সরকারের রোগ নিয়ন্ত্রণ, রোগতত্ত্ব ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (আইইডিসিআর) পরিচালককে।

নোটিশে আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য বিবাদীদের অনুরোধ করা হয়। অন্যথায় পরবর্তী আইনি পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে বলে জানানো হয়। পাশাপাশি এ ঘটনায় একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে বিষয়টি খতিয়ে দেখার অনুরোধ জানানো হয়। তদন্ত চলাকালীন সুধাংশু শেখর ভদ্রকে চাকরি থেকে সাময়িক বরখাস্ত করার অনুরোধ জানানো হয়।

ডাক বিভাগের ডিজি সুধাংশু শেখর ভদ্র- ফাইল ছবি

নোটিশে বলা হয়, বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, গত ১২ আগস্ট ডাক বিভাগের ডিজি করোনাভাইরাস পরীক্ষার জন্য আইইডিসিআর-এ নমুনা দেন। এর একদিন পর অর্থাৎ ১৩ আগস্ট সন্ধ্যায় তার নমুনা পরীক্ষার রিপোর্ট পজিটিভ আসে এবং তাকে সেই রিপোর্ট দেওয়া হয়। কিন্তু তিনি কোভিড-১৯ আক্রান্ত হওয়ার পরও সেই তথ্য গোপন করে গত ১৪ আগস্ট গণভবনে যান। সেখানে তিনি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৫তম শাহাদাত বার্ষিকী উপলক্ষে বিশেষ ডাক টিকিট, ডাটা কার্ড উম্মোচনের উদ্বোধনী কাজের জন্য প্রধানমন্ত্রীর খুব কাছাকাছি অবস্থান করেন। যা সংক্রামক রোগ (প্রতিরোধ নিয়ন্ত্রণ ও নির্মূল) আইন ২০১৮ এর ২৬ ধারা অনুযায়ী একটি শাস্তিযোগ্য অপরাধ।

এতে আরো বলা হয়, সুধাংশু শেখর ভদ্রের কর্মকাণ্ড শুধু বেআইনিই নয়, তিনি প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত নিরাপত্তা ও স্বাস্থ্যের জন্য চরম ঝুঁকিপূর্ণ কাজ করেছেন। তাই তথ্য গোপন করায় সংক্রামক রোগ আইন অনুযায়ী তার বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন।

আরো বলা হয়, আগস্ট মাসে বাংলাদেশের ইতিহাসে বর্বরতম সব হত্যাকাণ্ড ঘটেছে। স্বাধীনতাবিরোধী চক্র বাংলাদেশকে নেতৃত্বশূন্য করার জন্য বার বার এই মাসটিকেই বেছে নিয়েছে। তাই ডাক বিভাগের ডিজি করোনা আক্রান্ত হয়েও প্রধানমন্ত্রীর কাছাকাছি যাওয়ায় তার উদ্দেশ্য নিয়ে দেশবাসীর মধ্যে আতঙ্ক তৈরি হয়েছে। পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়েও প্রশ্ন উঠছে জনমনে। তাই জাতীয় স্বার্থেই বিষয়টি তদন্ত হওয়া প্রয়োজন।

এ জন্য একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে বিষয়টি তদন্ত করা এবং সুধাংশু শেখর ভদ্রকে সংক্রমক রোগ আইনের আওতায় এনে যথাযথ শাস্তি দেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্টদের প্রতি অনুরোধ জানান ওই দুই আইনজীবী। পাশাপাশি তদন্ত চলাকালীন সুধাংশু শেখর ভদ্রকে সাময়িকভাবে চাকরি থেকে বরখাস্ত করার অনুরোধ জানান তারা। এছাড়া প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তায় যেসব জায়গায় ঘাটতি রয়েছে সেগুলো শনাক্ত করে পুনরায় সংস্কারের জন্য নোটিশে অনুরোধ জানানো হয়।