ইসরায়েল সরকারে এই প্রথম কোনো আরব দল

নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণার পর বেশ কয়েকদিন অচলাবস্থার মধ্য দিয়ে গেছে ইসরায়েল। কারণ সরকার গঠনের মতো সংখ্যাগরিষ্ঠতা কোনো দলই পায়নি। এ অবস্থায় দীর্ঘ ১ যুগ ধরে ক্ষমতায় থাকা প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর ভাগ্য ঝুলে ছিল বিরোধীদের জোট করা-না করার ওপর। অবশেষে ‘নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে’ ৮ দলের জোট গঠন হয়েছে, যেখানে আছে একটি আরব দল।

ইউনাইটেড আরব লিস্ট প্রধান মনসুর আব্বাস

প্রধান বিরোধী নেতা ইয়ার লাপিদের নেতেৃত্বে এই জোট গঠিত হয়। এর ফলে নেতানিয়াহুকে ক্ষমতা থেকে সরে যেতে হচ্ছে। জোটের বিষয়টি ইতোমধ্যেই রাষ্ট্রপতিকে জানানো হয়েছে। এবার বিধি অনুযায়ী তিনি ক্ষমতা হস্তান্তরের ব্যবস্থা করবেন। জোটের নেতৃত্বে থাকা ইয়ামিনা পার্টির প্রধান নাফতালি বেনেট প্রথম ২ বছর প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করবেন। এরপর দায়িত্ব নেবেন ইয়ার লাপিদ।

৮ দলের জোটে থাকা একটি দলের নাম ইউনাইটেড আরব লিস্ট (রাআম)। ইসরায়েলের ইতিহাসে এই প্রথম কোনো আরব ইসলামিস্ট দল সরকারে ঢুকে পড়লো। দলটির প্রধান মনসুর আব্বাস ইতোমধ্যেই নেতানিয়াহু বিরোধী এই জোটে স্বাক্ষর করেছেন।

বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু

জোট গঠনের পর এক সাক্ষাৎকারে মনসুর আব্বাস বলেন, এটা আমাদের জন্য খুবই কঠিন একটা সিদ্ধান্ত ছিল। আমি জানি- অনেকেই এর সমালোচনা করবে, অনেক বিতর্ক হবে। কিন্তু আমি মনে করি, এর মাধ্যমে উপকৃত হবে আরবরা। সর্বোপরি, সরকার গঠনের এই সুযোগ আমরা হাতছাড়া করতে চাই না। সরকারে থাকলে আমরা ফিলিস্তিনিদের স্বার্থ নিয়েও কথা বলতে পারবো।

ইসরায়েলি পার্লামেন্ট নেসেট-এর মোট আসন ১২০টি। সংবিধান অনুযায়ী, কোনো দল বা জোটকে সরকার গঠন করতে হলে ৬১টি আসনের প্রয়োজন পড়ে। এতগুলো আসন না পাওয়ায় এর আগে কয়েকবার নির্বাচন হলেও সরকার গঠন নিয়ে টানাপোড়েন তৈরি হয়েছে। এবারও তেমনটাই ঘটেছে। তারপর জোট গঠনের মধ্য দিয়ে কেটেছে অচলাবস্থা।

নাফতালি বেনেট

তবে জোট গঠন হলেও কতদিন তা টিকে থাকে, সেটা একটা বড় প্রশ্ন। কারণ এর আগে একাধিকবার জোটের মাধ্যমে সরকার গঠন করা হলেও সেই জোট ভেঙে যাওয়ায় তৈরি হয়েছে রাজনৈতিক অস্থিরতা। এর ফলে গত ২ বছরে ৪টি নির্বাচন হয়েছে ইসরায়েলে।