আপনি পড়ছেন

চীনের উইঘুর প্রদেশের একজন নারী অভিযোগ করেছেন, তার বোনকে জেল থেকে মুক্ত করার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের একজন কর্মকর্তার সঙ্গে আলোচনা করায় তাকেসহ পরিবার ও আত্মীয় স্বজনকে হুমকি দিচ্ছে চীন। বার্তাসংস্থা এএনআই এর এক প্রতিবেদনে এ খবর দেওয়া হয়েছে।

renagul gheniরেনাগুল ঘেনি

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সংবাদমাধ্যম রেডিও ফ্রি এশিয়া (আরএফএ) -এ লেখা একটি প্রতিবেদনে নুরিমান আবদুরশিদ উল্লেখ করেন, কালবেনুর ঘেনি নামক উইঘুর বাসিন্দা ওই নারী অভিযোগ করেছেন, তার বোন রেনাগুল ঘেনির মুক্তির জন্য মার্কিন কর্মকর্তার সঙ্গে আলোচনা করায় তার পরিবারকে চুপ থাকতে হুমকি দিচ্ছে চীনের প্রশাসন। এ ছাড়া তার স্বজনদের লাগাতার জেরার সম্মুখীন হতে হচ্ছে।

এর আগে, গত বছরের ৩ ডিসেম্বর কালবেনুর সাবেক মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পাম্পেওকে জানিয়েছিলেন, বাবা মারা যাওয়ার পরে তার বোন রেনাগুল ইসলাম ধর্মমতে তাকে দাফন করেন। চীনা কমিউনিস্ট সরকার এই কাজগুলোকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে। এগুলো করায় তার বোন, দুই সন্তানের মা, যিনি পেশায় একজন শিক্ষিকা, সেই রেনাগুলকে বন্দী করে স্থানীয় প্রশাসন। এ ছাড়া ধর্মীয় গ্রন্থ কোরআন শরীফ ঘরে রাখায় তাকে ১৭ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়।

চীনের স্বায়ত্তশাসিত প্রদেশ জিনজিয়াং। প্রদেশটিতে মুসলিমরা সংখ্যাগরিষ্ঠ। কিন্তু তাদের দমন করতে পুনঃশিক্ষণের নামে ডিটেনশন ক্যাম্প তৈরি করেছে চীনের কমিউনিস্ট সরকার।

আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের একাধিক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ওই ডিটেনশন ক্যাম্পে অন্তত ১৮ লক্ষ উইঘুর মুসলিমকে বন্দী করে রাখা হয়েছে। যাদের দিয়ে ইচ্ছার বিরুদ্ধে বিভিন্ন কাজ করিয়ে নিচ্ছে চীন। ২০১৮ সালে গ্রেপ্তারের পর রেনাগুলকে দীর্ঘদিন এই ধরনের কনসেনট্রেশন ক্যাম্পে রাখার পর এই বছরের মে মাসে তাকে কারাগারে পাঠায় শি জিনপিং সরকার।

কালবেনুর মাইক পম্পেও সঙ্গে কথা বলার বিষয় জানান, 'যুক্তরাষ্ট্র যদিও এ বিষয়ে পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে তবুও আমি বলেছি (পম্পেওকে) উইঘুর পরিস্থিতি দিনদিন ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। ভয়াবহতা রোধে যে ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে কার্যত সেগুলো কোন ফল বয়ে আনছে না।'

যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক এডভোকেসি সংগঠন 'উইঘুর হিউম্যান রাইটস প্রজেক্ট' এর ৫৭ পৃষ্ঠার একটি প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে- চীন সরকার উইঘুরদের ভিডিও ধারণেও বাধ্য করে। তারা ভিডিওতে বলতে বাধ্য করে যে, উইঘুরে কোন দমন নিপীড়ন চালানো হচ্ছে না। আর এই ভিডিওগুলো বিদেশে থাকা তার স্বজনদের কাছে পাঠানো হয়। যেন এই দমন নিপীড়ন রোধে তারা কার্যকর কোন পদক্ষেপ গ্রহণ না করতে পারেন।

এদিকে, সম্প্রতি দ্য অস্ট্রেলিয়ান স্ট্র্যাটেজিক পলিসি ইন্সটিটিউটের পক্ষ থেকে বলা হয়, আগের অনুমানের চেয়ে ৪০ শতাংশ ডিটেনশন ক্যাম্প বেড়েছে জিনজিয়াংয়ে। সেখানে ৩৮০টির বেশি ডিটেনশন ক্যাম্প রয়েছে বলে সন্দেহ করা হচ্ছে। প্রতিষ্ঠানটির পক্ষ থেকে আরও জানানো হয়েছে যে, ২০২০ সালের জুলাই পর্যন্ত জিনজিয়াংয়ে নতুন করে আরও ৬১টি ডিটেনশন ক্যাম্প তৈরি করেছে চীন।

তবে চীন বলছে,জঙ্গিবাদ ঠেকাতে 'নতুন করে শিক্ষা' দেওয়ার উদ্দেশ্যে ক্যাম্পে বন্দি করে রাখা হয়েছে উইঘুরদের। ওই গবেষণা দলের প্রধান নাথান রুসার বলেন, তথ্য প্রমাণ বিশ্লেষণ করা দেখা যায় যে, অনেক নির্দোষ ব্যক্তিকে মামলা দিয়ে সেখানে আটকে রাখা হয়েছে।

তিনি আরও বলেন যে, আটক অনেক উইঘুর মুসলিমকে কড়া নিরাপত্তায় রাখা হয়েছে। আবার কিছু কিছু উইঘুর বন্দিদের শিল্পকারখানার নিকটবর্তী ডিটেনশন ক্যাম্পে রাখা হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, এ সব শিল্পকারখানায় জোর করে উইঘুর মুসলিমদের কাজ করানো হয়। গবেষণাটি স্যাটেলাইট থেকে প্রাপ্ত ছবি, প্রত্যক্ষদর্শী এবং গণমাধ্যমের বরাত দিয়ে করা হয়েছে বলে জানিয়েছে দ্য অস্ট্রেলিয়ান স্ট্র্যাটেজিক পলিসি ইন্সটিটিউট।

সূত্র- এএনআই

Get the latest world news from our trusted sources. Our coverage spans across continents and covers politics, business, science, technology, health, and entertainment. Stay informed with breaking news, insightful analysis, and in-depth reporting on the issues that shape our world.

360-degree view of the world's latest news with our comprehensive coverage. From local stories to global events, we bring you the news you need to stay informed and engaged in today's fast-paced world.

Never miss a beat with our up-to-the-minute coverage of the world's latest news. Our team of expert journalists and analysts provides in-depth reporting and insightful commentary on the issues that matter most.